ট্রেনের কামরায়। নিজস্ব চিত্র
চলন্ত ট্রেনে প্রসব করেছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। সেই প্রসূতি ও তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়াল রেল। রামপুরহাট স্টেশনে প্রসূতিকে নামিয়ে স্থানীয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তির ব্যবস্থা করেন রেলকর্মীরা। সেই সঙ্গে সদ্যোজাতের জন্মের শংসাপত্রের ব্যবস্থাও করেন। বুধবার সকালে রেলকর্মীদের এমন মানবিকতার নজিরে খুশি যাত্রীরা।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে বেঙ্গালুরুগামী আগরতলা-বেঙ্গালুরু হামসফর এক্সপ্রেস ট্রেনের বাতানূকুল বি-৯ কোচে যাত্রীদের সহযোগিতায় পুত্র সন্তান প্রসব করেন চেন্নাইয়ের বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সী এক মহিলা। পরে মালদহ স্টেশনে রেলওয়ে হাসপাতালে তাঁকে দেখানো হলেও মহিলার রক্তপাত বন্ধ হয়নি। ফলে ট্রেনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। রেলওয়ে কন্ট্রোল রুমে খবর দিয়ে রামপুরহাট স্টেশন ম্যানেজারকে ওই মহিলার অসুস্থতার কথা জানানো হয়। সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ রামপুরহাট স্টেশনে ট্রেন পৌঁছলে রেলের টিটিই, রেলের গার্ড, রেলপুলিশ, রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী, রেলকর্মী ও রেলওয়ে হাসপাতাল কর্মীদের সহযোগিতায় প্রসূতি-সহ সদ্যোজাতকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। প্রসূতির চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য ঘন্টাখানেক পরে ট্রেন স্টেশন ছাড়ে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কামরার ২২ নম্বর আসনের যাত্রী ছিলেন চেন্নাই এর বাসিন্দা এস ভিরাস্কাকমল নামে মহিলা। মহিলার সঙ্গে ছিলেন স্বামী পেশায় অরুণাচল প্রদেশে কর্মরত সেনাবাহিনীর ৪৫৬ ফিল্ড হাসপাতালের মেডিক্যাল কোর-এর কর্মী অরুণাচলম শিবা রামস্বামী ও তাঁদের দুই নাবালক পুত্র। গৌহাটি থেকে পেরেম্বু যাচ্ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। ট্রেনের ওই কামরায় সেনা হাসপাতালের আরও অনেক কর্মী ছিলেন। প্রত্যেকেই ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন। প্রসূতির স্বামী জানান, এক মাস পরে ডেলিভারির দিন ছিল। ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছিলাম। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ছাড়ার পরে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন স্ত্রী। প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। মহিলা যাত্রীরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ স্বাভাবিক প্রসব হয়।
রামপুরহাটের স্টেশন ম্যানেজার পুষ্কর কুমার জানান, ট্রেন স্টেশনে পৌঁছলে সদ্যোজাত এবং প্রসূতিকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। রামপুরহাট রেলওয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক এস ভাওয়াল জানান, প্রসূতির রক্তপাত হচ্ছিল। সেই কারণে চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট মেডিক্যল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।