আহত শিশু। নিজস্ব চিত্র।
বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল রাস্তার ধার বরাবর প্রতিবেশীর মাটির পাঁচিল। শুক্রবার সকালে মুরারইয়ের রামনগরে বৃষ্টি ভেজা পথে এলাকারই তিন শিশু রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের উপরে ভেঙে পড়ে সেই পাঁচিল। পাঁচিল চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বিট্টু চৌধুরী (৮) নামে এক শিশুর। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি বুম্বা চৌধুরী ও রোহন চৌধুরী নামে অন্য দুই শিশু।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টিতে রামনগর গ্রামের দীপক ফুলমালির বাড়ির সীমানা লাগোয়া মাটির পাঁচিলটি বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল। মৃত ও আহত শিশুরা দীপকের প্রতিবেশী। তাদের অভিভাবক-সহ অন্য প্রতিবেশীরা পাঁচিলটি ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এই আন্দাজ করে আগেই সতর্ক করেছিলেন দীপককে। বুধবার থেকেই পাঁচিল ভাঙার কাজ শুরু করেন দীপক। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির ফলে পাঁচিল ভাঙার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। কিছুটা অংশ হেলে ছিল।
এ দিন সকালে বিট্টুরা ওই পাঁচিলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেটি হুড়মুড়িয়ে তাদের উপরে ভেঙে পড়ে। বিকট আওয়াজ শুনে ছুটে যান পাড়া-পড়শি সকলেই। কাদা মাটির তাল সরিয়ে কোনও রকমে যখন তিনজনকে বের করা হয়। তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় মুরারই হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা বিট্টুকে মৃত বলে জানান। বুম্বা ও রোহনের সারা শরীরে চোট থাকায় তাদের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মৃত শিশুটির বাবা বিদ্যুৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘পাঁচিলটা আগেই ভেঙে দেওয়া উচিৎ ছিল। তাহলে ছেলেটা এ ভাবে অকালে যেত না।’’
গত বছর জুলাই মাসে দুবরাজপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৌরভ মণ্ডল তাঁর আট বছরের অসুস্থ ছেলে অনীককে নিয়ে চিকিৎসকের কাছ থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ ভাবেই পাঁচিল ধসে পড়ে তাঁদের উপরে। বাবা-ছেলে দু’জনেরই মৃত্যু হয়। এ দিনের ঘটনায় প্রতিবেশীদের ক্ষোভ, একটু নজর দিলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটত না বলে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তাপস মণ্ডল বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরে স্থানীয়েরা যদি দ্রুত উদ্ধার কাজে না নামতেন তাহলে একজনকেও বাঁচানো যেত না।’’ আর অভিযুক্ত দীপক ফুলমালি বলেন, ‘‘এই ঘটনা খুব বেদনাদায়ক। মন খারাপ করছে। নিজেকেই দোষী মনে হচ্ছে। পরিবারগুলির সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর মুখ নেই আমার।’’