বছর দেড়েকের শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শিরকাবাদে আড়শা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। রবিবার অসুস্থ এক শিশুকন্যার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান। ঘটনার জেরে ওই শিশুর পরিজনেরা রবিবার রাতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখান।
স্থানীয় বাসিন্দা মিহির মাঝি জানান, শিরকাবাদের বাসিন্দা অরূপ মণ্ডলের শিশুকন্যা গত শনিবার অসুস্থ হয়। শিশুটিকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখানো হয়। অরূপবাবুও এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘মেয়ের শ্বাসকষ্ট হওয়ায় চিকিৎসককে দেখিয়েছিলাম। তখন যদি আমাকে বলে দেওয়া হত যে অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাহলে তখনই পুরুলিয়া নিয়ে যেতাম। হয়তো মেয়েটাকে বাঁচাতে পারতাম।’’
রবিবার রাতে বিক্ষোভ চলাকালীন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের ঘটনাস্থলে আসার দাবি ওঠে। সোমবার শিরকাবাদে যান মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন প্রতিনিধি, বিডিও (আড়শা) শারহানাজ খানম, ওসি এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বৈঠকে বসেন। সেখানে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা ত্রিলোচন মাঝি বলেন, ‘‘এটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এখানে পাঁচ জন চিকিতসক থাকার কথা অথচ অধিকাংশ সময়ই এক জন বা দু’জন চিকিৎসক থাকেন।’’ পাশাপাশি রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসক এবং নার্সদের দুর্ব্যবহার, অভিযোগ করলে ভয় দেখানো, আউটডোরে না দেখে রোগীকে কোয়ার্টারে ডেকে পাঠানো-সহ নানা অভিযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধেরা। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থা চললেও কর্তৃপক্ষ উদাসীন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার দাবি জানানো হয়।
বৈঠক শেষে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত বলেন, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দারা কয়েক দফা দাবি আমাদের জানিয়েছেন। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকদের বলেছি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বর পরিচ্ছন্ন রাখতে। রোগীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির থাকতেও বলা হয়েছে। বাকি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে।’’