উপড়ে: ঝড়ে পড়ে গিয়েছে এই বটগাছটি। বোলপুর লায়েকবাজারে। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
আমপানে জেলাতে বড় অঘটন না ঘটলেও সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা। ঝড়ে কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিষেবা। আর্থিক দিক থেকেও চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। জেলাতে আছড়ে না পড়লেও আমপানের আঁচে জেলাতে অসংখ্য গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে তার ছিঁড়ে পরিষেবা ব্যবস্থা জেলার অনেক জায়গাতেই বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ঠিক হয়নি। দফতরের কর্মীরা অবশ্য জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যেই জেলার সব জায়গাতেই বিদ্যুৎ পরিষেবা ঠিক হয়ে যাবে বলে তাঁরা আশা করছেন।
বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকেরা জানান, বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়েছে। সেই সঙ্গে গাছের ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে শর্ট সার্কিট হওয়ায় অনেক ট্রান্সফর্মারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের বীরভূম জেলা রিজিওন্যাল ম্যানেজার দয়াময় শ্যাম বলেন, ‘‘জেলার প্রত্যেকটি ডিভিশন ক্ষতিগ্রস্ত। জেলাতে ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হচ্ছে। যত লাইন চালু হবে তত কোথায় কত ক্ষতি হয়েছে তার হিসেব জানা যাবে।’’
জেলার বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দুপুর পর্যন্ত জেলায় প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী ৬০ থেকে ৭০টি খুঁটি ভেঙেছে। সেই সঙ্গে ৩৫টি ট্রান্সফর্মার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে যত লাইন চালু করা হবে অর্থাৎ যেখানে যেখানে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যহত হয়ে আছে সেই সমস্ত জায়গায় পরিষেবা চালু করার পরে আরও খুঁটি উপড়ে যাওয়া বা ভেঙে যাওয়া ও ট্রান্সফর্মার পুড়ে যাওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হিসেব আরও বাড়বে।
জেলার রামপুরহাট ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে আমপানে এখনও পর্যন্ত ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতির হিসেব করা হয়েছে। রামপুরহাট ডিভিশনের হিসাব ধরলে জেলার সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জেলার বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা মনে করছেন।
জেলার রামপুরহাট ভিডিশনে ইতিমধ্যে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত মেরামত করে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করার কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন নিগমের রামপুরহাট গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর, খড়িডাঙা, পাইকপাড়া, আখিড়া, আয়াষ, বাধা এই সমস্ত এলাকায় ৮টি খুঁটি ভেঙেছে। গাছের ডাল পড়ে রামপুরহাট থানার জয়কৃষ্ণপুর, হাসপাতাল পাড়া, শহরের ভিতরে দমকল কেন্দ্রের সামনে, শান্তিপাড়া-সহ ৯ জায়গায় তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যহত হয়েছে। চারটি দলে ভাগ করে এলাকায় দ্রুত মেরামত করার চেষ্টা চলছে।
নলহাটি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের অধীন ডিহা, কুরুমগ্রাম ফিডার-সহ অন্য ফিডারের অধীন এলাকায় বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত লাইন মেরামত হয়নি বলে অভিযোগ। নলহাটি শহরে বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু হয়। রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু হলেও লো ভোল্টেজের সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের বীরভূম জেলা রিজিওন্যাল ম্যানেজার দয়াময় শ্যাম জানিয়েছেন, আশা করা যায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে জেলার সব জায়গায় বিদ্যুত পরিষেবা স্বাভাবিক হবে।