বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ। নিজস্ব চিত্র।
বৃষ্টি ও কংসাবতী সেচ খালের ছাড়া জলে ডুবে গিয়েছিল ধানজমি। রাস্তা কেটে সেই জল বের করে দেওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বাঁকুড়ার সিমলাপালের তালদা, আনন্দপুর এলাকায়। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ভবিষ্যতে নিকাশির জন্য তাঁরা ব্লক প্রশাসনের কাছে রাস্তার নীচে মোটা পাইপ বসানোর আর্জি জানিয়েছিলেন। প্রশাসন তা মেনেও নেয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত বদল করে পাইপ না বসিয়েই মোরাম ফেলে রাস্তার কাটা অংশ প্রশাসন ভরাট করার কাজ শুরু করায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়।
রাস্তাটির এক পাশে শিলাবতী নদী। অন্য পাশে আনন্দপুর গ্রামের কিছু বাসিন্দার জমি রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ১৬ অগস্ট সেই জমিতে জমে থাকা জল রাস্তা কেটে নদীর দিকে বের করে দেন কিছু বাসিন্দা। এর ফলে, ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়েন তালদা-সহ খামারডাঙা, সাইড়ি, আঁকরো, এলারডাঙা, অজগরা, বাঁশিপুর, পুইপাল, নতুনগ্রাম, ঝুমকা, মাদারা-সহ বারো-তেরোটি গ্রামের বাসিন্দা।
বিডিও (সিমলাপাল) রথীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, ‘‘রাস্তা কাটা নিয়ে সমস্যা হওয়ায় এলাকাবাসীকে সঙ্গে করে রবিবার বৈঠকে বসা হয়েছিল। তালদা গ্রামের বাসিন্দারা রাস্তার কাটা অংশে পাইপ বসিয়ে মোরাম ফেলতে বলেন। কিন্তু সেখানে পাইপ বসিয়ে জল নিকাশির ব্যবস্থা করলে ওই জলের ধাক্কায় নদী পাড়ের ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘তাই পাইপ না বসিয়ে রবিবার মোরাম ফেলে রাস্তাটি আগের অবস্থায় ফেরানোর কাজ শুরু হয়েছে।’’
গত সপ্তাহে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও কংসাবতী সেচখালের জলে আনন্দপুর গ্রামের প্রায় ৭০-৮০ জন চাষির ধান জমি ডুবে যায়। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, আগে জমিতে জল জমত না। কারণ, নিকাশি নালা দিয়ে জল নীচের দিকের জমিতে নেমে যেত। কয়েক বছর আগে নিকাশি নালার সামনে বিরাট পুকুর খোঁড়া হয়। তার চারপাশ উঁচু করে বেঁধে দেওয়ায় নিকাশি নালা বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে ভারী বৃষ্টি হলেই জমিতে জল জমে যাচ্ছে।
আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সজল সিংহবাবু, গঙ্গাধর সিংহবাবু, দ্বিজপদ সিংহবাবুদের দাবি, ‘‘সামান্য জমিতে চাষ করে সংসার চলে। কিন্তু জল জমে থাকায় চাষ বরবাদ হয়ে যাচ্ছে। তাই রাস্তার তলায় মোটা পাইপ বসানোর জন্য ব্লক প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন আশ্বাস দিয়েও শেষ পর্যন্ত পাইপ বসাল না। আবার যদি বৃষ্টি হয়, তখন তো ফের জমি জলের তলায় চলে যাবে।’’ বিডিও জানান, কী ভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়, তা তাঁরা ভেবে দেখছেন।