সোনামুখীর তেলরুইয়েa ফসল ভরা মাচা মেরামতে ব্যস্ত চাষি। ছবি: শুভ্র মিত্র
কয়েক মিনিটের ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে অল্প সময়ের শিলাবৃষ্টি। তাতেই ক্ষতি হল ফসলের। মঙ্গলবার দুপুরে বড়জোড়া ও সোনামুখীতে শিলাবৃষ্টির পরে চাষিদের দাবি, ঝিঙে, লাউ, পটল-সহ গ্রীষ্মকালীন আনাজের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আঘাত পাওয়া আনাজ নষ্ট হওয়ার আগে দ্রুত বিক্রি করতে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি দফতর।
বড়জোড়ার কেন্দ্রবেদিয়া, কাঁটাবাঁধ গ্রামের আনাজ চাষিরা জানাচ্ছেন, আকারে ছোট হলেও অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে শিল পড়েছে। তাই আনাজের সঙ্গেই গাছের ডাল ভেঙেছে পাতা ফুটো হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রবেদিয়া গ্রামের চিরঞ্জিৎ রায় বলেন, ‘‘শসা, ঝিঙে, লাউ বেশির ভাগ আনাজেই শিলার আঘাত লেগেছে। আর ভাল দাম পাওয়া যাবে না। এই আনাজ না তুললে পচে যাবে।’’ ওই গ্রামের সমীর রায়, ফটিক রায়, শ্রীকান্ত রায়েরা জানান, এই সময়ে আনাজের ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছিল। ঠিক তখনই প্রকৃতির রোষে ক্ষতি হয়ে গেল।
সোনামুখীর রণপুর, নবাসন, ইসবপুর, তেলরুই, নিত্যানন্দপুর, হামিরহাটি, নন্দমোহনপুর গ্রামের কৃষকেরা জানান, ওই এলাকার সব জমি তিন ফসলি। দেরি করে ধান রোওয়া হয়েছিল। কোনও কোনও খেতে ধানে ফুল এসেছে। কোনও খেতে সবে ধানের শীষ পুষ্ট হতে শুরু করেছে। ঝড়ে সব ধানগাছ মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, ফলন কমে যাবে।
ক্ষতি হয়েছে তিল চাষেও। মিশ্র পদ্ধতিতে মাচায় করোলা আর শশা চাষ করেছিলেন সোনামুখীর তেলরুই গ্রামের নিত্যানন্দ দেবনাথ, লালু গড়াই, বারুইবেড়া গ্রামের নিতাই গড়াই, উজ্জ্বল মণ্ডলেরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, ‘‘শিলের আঘাতে ফসল বরবাদ হয়ে গেল। এই ক্ষতি কী ভাবে সামলাব?’’
শিলের আঘাতে আমের গায়ে দাগ ধরেছে। সোনামুখী ব্লকের আমচাষি নিত্যানন্দ দেবনাথ বলেন, ‘‘এমনিতেই হিমসাগর, আম্রপালি আট থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। এ বার দাম আরও নেমে যাবে। ক্ষণিকের শিলাবৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেল।’’
বিষ্ণুপুর মহকুমার সহ-কৃষি অধিকর্তা (বিষয়বস্তু) তাপস ঘোষ বলেন, ‘‘শিলের আকার ছোট ছিল। তাই গাছের বড় ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে আঘাতপ্রাপ্ত আনাজ দ্রুত বাজারজাত করতে হবে।’’ তিনি জানান, সোনামুখীর প্রায় ১০০ শতাংশ ধান উঠে গিয়েছে। তবে কারও বোরো ধানের ক্ষতি হলে কৃষি বিমা করা থাকলে তিনি ব্লক কৃষি দফতরে জানাতে পারেন।