—ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে লোকসভা। দুই নির্বাচনেই বিপর্যয়ের পরে পুরুলিয়ায় ঘুরে দাঁড়াতে দলের শাখা সংগঠনগুলির দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে সিপিএম। দল সূত্রে খবর, এ বার দলের খেতমজুর ইউনিয়নের প্রথম জেলা সম্মেলন করে সেই সংগঠনকে পরিপূর্ণ রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর রঘুনাথপুর ২ ব্লকের ব্লক সদর চেলিয়ামায় হতে চলেছে খেতমজুর ইউনিয়নের প্রথম জেলা সম্মেলন। থাকার কথা খেতমজুর ইউনিয়নের সম্পাদক তথা দলের রাজ্য কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রের।
দল সূত্রের খবর, অতীতে খেতমজুরদের নিয়ে আলাদা কোনও সংগঠন ছিল না সিপিএমের। কৃষক সংগঠন সারা ভারত কৃষকসভার সদস্য ছিলেন খেতমজুরেরাও। কয়েক বছর আগে খেতমজুরদের নিয়ে পৃথক সংগঠন তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় দলের কেন্দ্রীয় কমিটি। তারপরেই পুরুলিয়াতেও সম্মেলনের বদলে কনভেনশন করে সংগঠন পরিচালনার জন্য একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। সম্পাদক হন হলধর মাহাতো। সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শক্তি বাউড়িকে। কিন্তু সম্মেলন করে পুরো দস্তুর কমিটি তৈরি হচ্ছে এই প্রথমবার।
জেলা সিপিএমের অন্দরের খবর, দুই নির্বাচনে দলের বিপর্যয়ের কারণের ময়না-তদন্ত করার সময়েই উঠে এসেছিল শাখা সংগঠনগুলি দুর্বল হয়ে পড়ার কথা। তারপরেই শাখা সংগঠনগুলিকে শক্তিশালী করার দিকে নজর দেওয়া শুরু হয়।
অগস্ট মাসে কলকাতায় খাদ্য আন্দোলনের ৬০ বছর পূর্তির সমাবেশে একশো দিনের কাজের দাবি ও কাটমানির প্রতিবাদে আন্দোলনে নামতে কৃষকসভা ও খেতমজুর ইউনিয়নকে আন্দোলনে নামতে বলা হয়। পঞ্চায়েত স্তরে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। বৃষ্টি-নির্ভর পুরুলিয়া জেলায় বছরে মাস চারেক চাষের কাজ পান খেতমজুরেরা। বাকি আট মাস তাঁদের নির্ভর করতে হয় একশো দিনের কাজের উপরে। তাই বছরে দুশো দিন কাজ, সাড়ে তিনশো টাকা মজুরি, ষাট বছরের পরে প্রতি খেতমজুরকে মাসে ছয় হাজার টাকা পেনশন দেওয়ার মতো দাবিগুলি স্মারকলিপি দেওয়ার সময়ে তুলে ধরছেন ইউনিয়নের নেতারা।
তবে, এখনও পর্যন্ত জেলার ১৭০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭৩টি পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সংগঠন সূত্রের খবর, বর্তমানে পুরুলিয়ায় খেতমজুর ইউনিয়নের সদস্য সংখ্যা ৫৭ হাজার। কিন্তু আরও বহু খেতমজুরকে সংগঠনের মধ্যে এখনও আনা সম্ভব হয়নি। সংগঠনের নেতারা জানাচ্ছেন, সম্মেলনের মাধ্যমে পুরোদস্তুর কমিটি গড়ে নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করলে খেতমজুর ইউনিয়নের সদস্য সংখ্যা আরও বাড়বে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা পাড়া ব্লকে খেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি দীননাথ লোধা জানান, জেলা সম্মেলন করার আগে ব্লকগুলিতে সম্মেলন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় খেতমজুরদের সমস্যা নিয়ে রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসন উদাসীন। যে কারণে ক্ষেতমজুরদের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।
সম্মেলনে খেতমজুরদের সমস্যা নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে।” সূত্রের খবর, সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষে কনভেনশনে তৈরি হওয়া কমিটির মধ্যে কিছু বদল ঘটিয়ে নতুন কমিটি তৈরির সম্ভাবনা আছে।’’