কাস্তে হাতুড়িতে পড়েছে সাদা চুনের পোচ। সাজানো হয়েছে তেরঙ্গা বেলুনে। —নিজস্ব চিত্র
সিপিএমের পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ উঠল। রবিবার রাতে বরাবাজারের জয়নগর পা়ড়ার ঘটনা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণীন্দ্র গোপের অভিযোগ, রবিবার মধ্যরাতে তৃণমূলের স্থানীয় কয়েক জন নেতা কর্মী ওই এলাকায় দলের অফিসে নতুন তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। পাশে শাসক দলের ঝান্ডাও পুঁতে দেওয়া হয়েছে। যদিও দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, সিপিএম ৩৯ বছর ধরে স্থানীয় এক বাসিন্দার জমি দখল করে পার্টি অফিস বানিয়েছিল। বান্দোয়ান বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএম হেরে যাওয়ার পরে বাড়িওয়ালা নিজে তাঁর জমির দখল নিয়েছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এই ঘটনায় দলের কর্মীরা যুক্ত নন।
বরাবাজারে জয়নগর পাড়ায় সিপিএমের কৃষক সভার একটি অফিস ছিল। দলের জেলা সম্পাদক মণীন্দ্র গোপ সেখানেই বসতেন। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, দরজায় তালা ঝুলছে। কড়ায় আড়াআড়ি ভাবে তৃনমূলের পতাকা লাগানো রয়েছে। মণীন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘দলীয় কর্মীদের সংযত হতে বলেছি। প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয় সে দিকে আমরা লক্ষ রাখছি।’’ বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে মণীন্দ্রবাবু দাবি করেন। তবে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। মণীন্দ্রবাবু জানান, বরাবাজার লোকাল কমিটির সম্পাদক শিবনাথ গোপ এলাকার বাইরে রয়েছেন। তিনি ফিরলেই পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানানো হবে।
বরাবাজারের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য সুমিতা সিংহ মল্ল অবশ্য দাবি করেন, পার্টি অফিসের জমিটি স্থানীয় বাসিন্দা গোবর্ধন শর্মার ছিল। তাঁকে ভয় দেখিয়ে সিপিএম ওই জমি দখল করে পার্টি অফিস বানিয়েছিল। সুমিতাদেবীর দাবি, গোবর্ধনবাবু বেঁচে থাকাকালীন ওই জমি ফেরত পাননি। ভাড়া বাবদ কোনও টাকাও পাননি। এই নির্বাচনে বান্দোয়ান বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএম হারার পরে গোবর্ধনবাবুর নাতি ধর্মেন্দ্র শর্মা বাড়ির দখল নিয়েছেন। সুমিতাদেবী বলেন, ‘‘ধর্মেন্দ্রবাবু আমাদের দলের সমর্থক। দলের ঝান্ডা উনিই লাগিয়েছেন।’’ ওই জমিটি তাঁদের বলে দাবি করেছেন ধর্মেন্দ্রবাবুও। তবে এর বেশি আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
সোমবার ওন্দার বহড়াবাঁধ গ্রামে তৃণমূলের একটি বিজয় মিছিল থেকে সিপিএম কর্মীদের বাড়িতে ইঁট ছুঁড়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি সিপিএমের তরফে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তরুণ সরকার বলেন, “ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই বারে বারে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে আক্রমণ চালাচ্ছে শাসক দল। এ দিনের ঘটনাটি থানায় মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।”
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ভোটে হেরে মুখ লুকোনোর জায়গা নেই সিপিএমের। তাই আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। কোথাও কোনও ঝামেলা হয়নি।” পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনার তদন্ত শুরু হবে।