বলরাম সিং সর্দার। নিজস্ব চিত্র।
ভোটাভুটিতে হেরে ৪৩ বছর পরে, পুরুলিয়ার মানবাজার পঞ্চায়েত হাতছাড়া হল বামেদের। প্রধান পদে নির্বাচনের জন্য শুক্রবার সদস্যদের মধ্যে ভোটাভুটি হয়।
বিডিও (মানবাজার ১) মোনাজকুমার পাহাড়ি বলেন, “নির্বাচনে তৃণমূলের বলরাম সিং সর্দার সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জিতে প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূলেরই শুকুরমণি হেমব্রম।” পঞ্চায়েত চত্বর ঘিরে রেখেছিল পুলিশ বাহিনী।
রাজ্যে বর্তমান পঞ্চায়েত ব্যবস্থা শুরুর পরে, মানবাজার পঞ্চায়েতে এক টানা সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রেখেছিল বামফ্রন্ট। ২০১৩-য় দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও, প্রধান পদ সংরক্ষিত হওয়ায় তৃণমূলের বাসন্তী মুর্মু প্রধান হন। তবে পঞ্চায়েত পরিচালনার ভার বামফ্রন্টের হাতেই ছিল।
২০১৮-য় ভোটে জেতার পরে, প্রধান হন সিপিএমের দীনবন্ধু বাউড়ি। তবে, ২০২০-তে তাঁর মৃত্যু হলে ১৫ সদস্যের পঞ্চায়েতে বামফ্রন্ট এবং তৃণমূলের আসন-সংখ্যা সমান হয়। আট জন সিপিএম সদস্যের সঙ্গে ছিলেন এক ফরওয়ার্ড ব্লকের সদস্য। তবে উপপ্রধান পদও শূন্য থাকায় পঞ্চায়েত পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে পঞ্চায়েত সচিবের উপরে। পরে, বর্ষীয়ান সদস্য তৃণমূলের বলরাম সিং সর্দারকে ‘প্রোটেম’ প্রধান হিসাবে মনোনীত করা হয় ।
তবে স্থায়ী প্রধান না থাকায় অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জটিলতা তৈরি হচ্ছিল বলে পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়।
পাশাপাশি, পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, ছ’মাসের মধ্যে প্রধান পদের নির্বাচনও জরুরি হয়ে উঠেছিল। এ দিন নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দু’পক্ষের প্রার্থী থাকায় নির্বাচনের নিয়ম মেনে ভোট হয়েছে। তৃণমূল প্রার্থীর পক্ষে ন’টি ও বামফ্রন্টের প্রার্থীর পক্ষে পাঁচটি ভোট পড়েছে।”
নির্বাচনে হারের পরে, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ চৌধুরীর যদিও অভিযোগ, “টাকার বিনিময়ে ফরওয়ার্ড ব্লক ও আমাদের দলের এক সদস্যকে তৃণমূল কিনে নিয়েছে। এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি।”
জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (শিক্ষা) গুরুপদ টুডুর তবে দাবি, “দুই বাম সদস্য স্বেচ্ছায় আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন।” দলের সদস্য কেন তৃণমূলকে সমর্থন করেছেন, তা খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের পুরুলিয়া জেলা নেতা বাবলু চট্টোপাধ্যায়। ওই ফরওয়ার্ড ব্লক সদস্য ঝাপান কুম্ভকার এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।