রাস্তায় সিপিএমের মিছিল। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
একটু একটু করে লোকসভা ভোটের আঁচ চড়তে শুরু করেছে। নিচুতলার কর্মীদের উজ্জীবিত করতে রাস্তায় নেমে পড়ল পাড়া ব্লক সিপিএম।
শাসকদলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আর পুলিশ ও প্রশাসনের কাজে স্বচ্ছতার দাবিতে মঙ্গলবার স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে ব্লক ও থানায়। নেতাদের দাবি, কর্মসূচিতে প্রায় হাজার পাঁচেক কর্মী-সমর্থক উপস্থিতি ছিলেন। তবে পুলিশের দাবি, সংখ্যাটা মেরেকেটে হাজার দুয়েক। ব্লকের সিপিএম নেতারা খুশি। পাড়ার দায়িত্বে থাকা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীননাথ লোধা বলেন, ‘‘শাসকদলের নেতারা বলছেন, সিপিএমকে এখন দূরবীণ দিয়ে খুঁজতে হয়। এ দিনের সমাবেশ প্রমাণ করেছে, মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে লড়াইয়ের ময়দানে শুধু আমরাই আছি।”
পঞ্চায়েত ভোটে পুরুলিয়ায় আশা মাফিক ফল করতে পারেনি বামেরা। তার উপরে, সম্প্রতি দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন পুরুলিয়ার প্রাক্তন সাংসদ ফরওয়ার্ড ব্লকের নরহরি মাহাতো। প্রকাশ্যে না মানলেও এই দলবদল বামেদের অন্দরে অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে। লোকসভা ভোটের আগে তাই সংগঠন গুছিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে সিপিএম সূত্রের খবর।
মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়। দুপুরে দুবড়ার পার্টি অফিস থেকে মিছিল করে বাম নেতা-কর্মীরা যান পাড়া ব্লক অফিসে। ছট পুজোর ছুটি থাকলেও পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বলে এ দিন সিপিএমের স্মারকলিপি নিয়েছে প্রশাসন। পরে থানার সামনে পথসভা করে সেখানেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়। মূলত পাড়া পঞ্চায়েত সমিতি গঠনে অনিয়ম, এখনও পর্যন্ত ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন না হওয়া, বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার মতো বেশ কিছু ব্যাপারে অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। চাষিদের থেকে সহায়ক মূল্যে দিয়ে ধান কেনা, একফসলি জমিতে এ বার ধানের ফলন ভাল না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মত কিছু দাবিও তোলা হয়েছে।
পাড়ায় পঞ্চায়েত ভোটের পরে ছোট থেকে মাঝারি কর্মসূচি নিতে দেখা যাচ্ছে সিপিএমকে। দীননাথবাবু জানান, মঙ্গলবার বড়়সড় জমায়েতের লক্ষ্য নিয়েই নেমেছিলেন তাঁরা। তবে এ দিনের কর্মসূচির সঙ্গে লোকসভা ভোটের সরাসরি যোগ নেই বলে দাবি করছেন তিনি। দীননাথবাবু বলেন, ‘‘পাড়া তো বটেই, গোটা জেলা আর রাজ্যে আজ গণতন্ত্র বিপন্ন। মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে। আক্রান্ত মানুষের হয়েই এ দিনের কর্মসূচি।’’
পাড়ার তৃণমূল বিধায়ক উমাপদ বাউড়ির পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘তিন দশক ধরে সরকারে থেকে রাজ্যে গণতন্ত্রকে পিষে মেরে ফেলেছে সিপিএম। ওঁদের মুখে গণতন্ত্র রক্ষার কথা মানায় না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সিপিএম গোটা ব্লক থেকেও হাজারের বেশি লোক জোগাড় করতে পারেনি। আমাদের একটা পঞ্চায়েত স্তরের কর্মসূচিতেই কয়েক হাজার লোক হয়।”