রাজপথে: বাঁকুড়া শহরে সিপিএমের মিছিল। নিজস্ব চিত্র
লক্ষ্য ছিল নিজের সাংগঠনিক শক্তি পরখ করা। তাই বামফ্রন্টের ব্যানারে কর্মসূচি না করে একক ক্ষমতায় মিছিল ও সভার ডাক দিয়েছিল সিপিএম। যদিও সভার চেহারা কেমন হবে তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন নেতৃত্বের একাংশ। সোমবার বাঁকুড়া শহরে মিছিল এবং সভায় ভিড় দেখে সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের ‘লক্ষ্যপূরণ’ হয়েছে।
গ্রামে গ্রামে একশো দিনের কাজের ব্যবস্থা করা, চাষিদের ফসলের ন্যায্য দাম, অনাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মতো বিভিন্ন দাবিতে সোমবার বাঁকুড়া শহরে মিছিল করে। পরে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আর এক সদস্য অমিয় পাত্র। কর্মসূচি শেষে অমিয়বাবু বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল ১৫ হাজার মানুষের জমায়েত করা। সেই লক্ষ্য পূরণও হয়েছে।” যদিও পুলিশের দাবি, হাজার সাতেক মানুষের ভিড় হয়েছিল সভায়। একক ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ নিয়ে অমিয়বাবুর প্রতিক্রিয়া, “নিজেদের শক্তি মেপে নেওয়া সব দলেরই দরকার। তাই মাঝেমধ্যে একক ভাবে কর্মসূচি নিই।”
এ দিন সকালে বাঁকুড়ার হিন্দু স্কুল এলাকা থেকে সিপিএমের মিছিল শুরু হয়। পরে শহর ঘুরে মাচানতলা পেট্রোলপাম্প মোড়ে হয় সভা। ভিড় দেখে উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি সুজনবাবু। বলেন, “আজকের ভিড়ই জানিয়ে দিচ্ছে, মানুষের দাবি আদায়ে লাল ঝান্ডার চেয়ে বড় শক্তি নেই।”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, গত লোকসভা ভোটে বাঁকুড়া কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী অমিয় পাত্রের সমর্থনে শহরে যে মিছিল বেরিয়েছিল, তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে এ দিনের মিছিলে। লোকসভা ভোটের মুখে সেই মিছিলে নজরকাড়া ভিড় হলেও তার প্রতিফলন দেখা যায়নি ভোটবাক্সে। লোকসভা ভোটের পরে বাঁকুড়ায় কর্মীসভা তৃণমূল নেতা তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘‘অমিয়বাবুর ভোট প্রচারের মিছিলে যে লোক হয়েছিল, কেবল সেইটুকু ভোটও সিপিএম ধরে রাখতে পারলে বিজেপি জিততে পারত না।’’
সিপিএমের মিছিল নিয়ে কটাক্ষের সুর শোনা গিয়েছে তৃণমূলের বাঁকুড়া সংসদীয় জেলার সভাপতি শুভাশিস বটব্যালের গলায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘লোকসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করেছিল সিপিএম। এখন অস্তিত্ব রক্ষা করতেই লোক জমায়েত করছে ওরা।”
বাঁকুড়ার সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকারের প্রতিক্রিয়া, “সিপিএমের মিছিলে ভিড় দেখলে তৃণমূল অক্সিজেন পায়। সিপিএমকে বাঁচাতে ওরাই ভাড়া করে লোক পাঠায়।’’