ফাইল চিত্র।
উন্নয়নের নামে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে এবং টাকা ফেরানোর দাবিতে রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসনিক ভবনের বাইরে সম্প্রতি গণ-অবস্থান করেছিল সিপিএম। সেই কর্মসূচিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি অডিয়ো রেকর্ডিং মাইকে শুনিয়ে সিপিএম দাবি করেছিল, সেটি রামপুরহাট পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামীর (যিনি শহরের পরিচিত তৃণমূল নেতাও) সঙ্গে অন্য এক তৃণমূল কাউন্সিলরের কথোপকথন। এই অডিয়ো নিয়ে রামপুরহাট থানায় অভিযোগও করা হয়। অভিযোগ করা হয় মহকুমাশাসকের কাছেও।
এ বার সেই অডিয়ো নিয়ে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর সঞ্জীব মল্লিক। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ জেলাশাসকের দফতরে যান তিনি। অডিয়োর সত্যতা যাচাই করতে ফরেন্সিক পরীক্ষারও আবেদন জানান ওই সিপিএম নেতা। সঞ্জীববাবু বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পিছু একটি ওয়ার্ড থেকে ১৮ লক্ষ টাকা কাটমানি তাঁদের কাছে রাখা আছে এবং সেই টাকা কী ভাবে খরচ করা হবে— তা নিয়ে ওই অডিয়োয় আলোচনা শোনা গিয়েছে। এ ছাড়া পুকুর কাটার টাকা, বিশ্ববাংলার লোগো লাগানোর খরচ, রামপুরহাট পুরসভায় নিয়োগ থেকেও কাটমানির কথা শোনা যাচ্ছে। আমরা চাই ঘটনার তদন্ত হোক। দোষীদের শাস্তি হোক। যাঁদের কাছে কাটমানি নেওয়া হয়েছে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হোক।’’
এ বিষয়ে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।‘
তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই অভিযোগের তদন্তে পাঁচ জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে ওই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘যে কথোপকথন ঘিরে বিতর্ক, তাতে এক কাউন্সিলর ও রামপুরহাট শহরে দলের কার্যকরী সভাপতির কথাবার্তা শোনা গিয়েছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে তদন্তে কমিটি তৈরি হয়েছে। তার নেতৃত্বে রয়েছেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক হয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই দু’জন সংগঠনের কোনও দায়িত্বে থাকবেন না।’’
তবে অভিযোগ উড়িয়ে রামপুরহাটের পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি দাবি করেছেন, ‘‘আমাদের বোর্ড গঠনের আগেও ওই ওয়ার্ডে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি হয়েছে। তখন কেন কাটমানির অভিযোগ ওঠেনি?’’ অডিয়ো নিয়ে পুরপ্রধানের বক্তব্য, তিনি এ বিষয়ে খোঁজখবর নেবেন। বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নজরেও আনা হবে। মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই অডিয়োর সত্যতা যাচাইয়ে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো উচিত। দুর্নীতি হয়ে থাকলে থানায় অভিযোগ করা উচিত।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘বাম আমলেও বিভিন্ন ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতিরও তদন্ত হওয়া উচিত।’’