বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং অনুব্রত মণ্ডল।
অনুব্রত মণ্ডলের ‘চড়াম চড়াম’ এখন তাঁর পিঠেই হচ্ছে বলে দাবি করলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
শুক্রবার সিপিএমের ‘গ্রাম জাগাও, চোর তাড়াও, বাংলা বাঁচাও’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে পাড়ুইয়ের সাত্তোরে এসে বিকাশ বলেন, ‘‘তিনি (অনুব্রত) একটা দুর্নীতির পাহাড় এবং তিনি গোটা বীরভূম জেলার সর্বনাশ করেছেন। তার প্রমাণ হচ্ছে আজ শান্তিনিকেতনে শান্তি নেই। গরিব মানুষেরা ১০০ দিনের কাজ করে টাকা পাচ্ছেন না, লেখাপড়া জানা ছেলে মেয়েদের চাকরি নেই, কাজের জন্য শিক্ষিত ছেলেদের যেতে হচ্ছে ভিন রাজ্যে। এই সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধে আজ আমাদের মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে।’’
অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে জেলায় নিজেদের মাটি শক্ত করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিরোধীরা। এ দিন বিকালে সাত্তোর বাজার থেকে সিপিএমের পদযাত্রা শুরু হয়। ওই পদযাত্রায় বিকাশ ছাড়াও ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ সহ জেলা নেতৃত্ব। পদযাত্রাটি গ্রাম পরিক্রমা করে আবার সাত্তার বাজারে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে পথসভা হয়।
সেই সভায় বোলপুরের শিবপুর মৌজায় শিল্পের জন্য জমিদাতাদের আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে বিকাশ অভিযোগ করেন, তিনি শিবপুরে শিল্পের দাবিতে জমি দাতাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন অনুব্রত মণ্ডলের ‘নির্দেশে’ পুলিশ তাঁদের আটকে দিয়েছিল। বিকাশ কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আজ যদি আপনারা পাঁচ জন মিলে মাথা উঁচু করে দাঁড়ান, তা হলে অনুব্রত ঘরে ঢুকেছেন, আরও ঘরে ঢুকে পড়বেন। ওঁর হম্বিতম্বি আর চলবে না। ওঁর চড়াম চড়াম এখন ওঁর নিজের পিঠে হচ্ছে! আপনাদের দিকে আর আসবে না।’’
অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের প্রাথমিকে চাকরি নিয়েও এ দিন খোঁচা দিয়েছেন সিপিএম সাংসদ। তিনি বলেন, “যে ছেলেটির মেধা রয়েছে, সে চাকরি পাচ্ছে না। অথচ অনুব্রতর মেয়ে কী করে চাকরি পেল। যে পরীক্ষায় বসেনি, সে-ও চাকরি পাচ্ছে। এর তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেল, এরা সবাই চোর। কেউ বাদ নেই।’’
বিকাশের অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি তথা দলের মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওরা এখন গরম গরম কথা বলে মানুষকে নিজেদের কাছে টানতে চাইছে। কিন্তু এতে কোনও লাভ হবে না।অনুব্রত মণ্ডলের সংগঠন সারা বছর মানুষের পাশে থাকে, তাই ও-সব কথা অনুব্রতর মুখেই মানায়। ওদের মুখে নয়।’’ তাঁর দাবি, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনও উন্নয়নকে দেখেই ভোট হবে, কারও কথায় হবে না ।