—প্রতীকী চিত্র।
গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বোর্ড গঠন রুখতে নদিয়ার ‘রুইপুকুর মডেল’-এর ছবি দেখা গেল পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায়। বৃহস্পতিবার বড়জোড়ার বৃন্দাবনপুর পঞ্চায়েতে সিপিএমের এক সদস্যের সমর্থনে বোর্ড গড়ে বিজেপি। আবার মানবাজার ১ ব্লকের ধানাড়া পঞ্চায়েতে এক বিজেপি সদস্যের সমর্থনে বোর্ড পেল সিপিএম। তবে ধানাড়ায় অন্যায় ভাবে তাঁদের হারানো হয়েছে, এই অভিযোগে পরে পথ অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মীরা।
১১ আসনের বৃন্দাবনপুর পঞ্চায়েতে বিজেপি ও তৃণমূল ৫টি করে এবং সিপিএম ১টি আসন পায়। দিনের শুরুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বোর্ড গঠন বানচাল করার চেষ্টার অভিযোগ তোলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা ঝন্টু মণ্ডল। বিজেপির বিরুদ্ধে জমায়েত করে পাল্টা ভয় দেখানোর অভিযোগ তোলেন বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি কালিদাস মুখোপাধ্যায়। তবে সিপিএম সদস্য পরেশ লোহারের সমর্থনে প্রধান হন বিজেপির মনসা বাউরি। উপপ্রধান হন বিজেপির রাজেশ বিশ্বাস।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কালিদাসের কটাক্ষ, ‘‘সিপিএম-বিজেপি যে বন্ধু, মানুষ তা দেখলেন।’’ যদিও সিপিএমের বেলিয়াতোড় এরিয়া সম্পাদক সুজিত চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘দল এই কাজ সমর্থন করে না। ওই সদস্যকে বোর্ড গঠনের সভায় অনুপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। তিনি দলীয় নির্দেশ অমান্য করেছেন। কোনও চাপে তিনি এই কাজ করে থাকতে পারেন।’’ তবে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক অমরনাথ শাখার দাবি, ‘‘এলাকার মানুষ তৃণমূলকে সরাতে চেয়েছিল। বোর্ড কারা গড়বে তাঁরাই ঠিক করে দিয়েছেন।
ধানাড়া পঞ্চায়েতেও সবার নজর ছিল। এখানে ১১টি আসনের মধ্যে সিপিএম ৫টি, তৃণমূল ৪টি ও বিজেপি ২টি আসনে জেতে। সিপিএম ও তৃণমূল দু’তরফ প্রধান পদের নাম প্রস্তাব করে। বিজেপির এক সদস্য ভোট দানে বিরত থাকেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, দু’পক্ষই ৫টি করে ভোট পায়। তারপরেই গোলমালের সূত্রপাত।
মানবাজার ১ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও রাজীব মুর্মু বলেন, ‘‘এক সিপিএম সদস্য পরে জানান, তিনি ভোটদানের সময় ভুল করেছেন। তা সংশোধন করতে চান। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী তিনি তা সংশোধন করেন। তাতে সিপিএমের পক্ষে ৬টি ভোট ও তৃণমূলের পক্ষে ৪টি ভোট জমা হয়। প্রধান হন সিপিএমের সুজাতা মণ্ডল, উপপ্রধান বিজেপির পাখি বাউরি।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ চৌধুরী বলেন, ‘‘যে বিজেপি সদস্য আমাদের সমর্থন করেছেন, তাঁর পরিবার আগে থেকেই আমাদের দলের সমর্থক।’’ বিজেপি নেতা বাণীপদ কুম্ভকারের দাবি, নিচুতলার কর্মীরা কী করছেন, বোঝা সম্ভব নয়।
কিন্তু অন্যায় ভাবে তাঁদের হারানো হয়েছে এই অভিযোগ তুলে ধানাড়া অঞ্চলের তৃণমূল নেতা দিলীপ প্রামাণিক ও দিলীপ সোরেনরা পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে এ দিন বিকেলে মানবাজার বাসস্ট্যান্ড মোড়ে, মানবাজার-বান্দোয়ান রাজ্য সড়ক প্রায় ঘণ্টা দেড়েক অবরোধ করেন।
বিদায়ী সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিডিও (মানবাজার ১) মোনাজকুমার পাহাড়ি গিয়ে তাঁদের বোঝান। বিডিও বলেন, ‘‘ওখানে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও নথিপত্র দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ সুজয় দলীয় কর্মীদের আইনি সহায়তা নিতে নথিপত্র নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন।