বাড়িতে হামলায় ধরা পড়েনি কেউ

অমিয়র নামে পাল্টা দুর্ব্যবহারের মামলা

শনিবার বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ অমিয়বাবুর তালড্যাংরার বাড়িতে জনা ষাটেক সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। অমিয়বাবুর দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতা কর্মীদের উপস্থিতিতে দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ১৩:২০
Share:

অমিয়বাবুর তালড্যাংরার বাড়িতে জনা ষাটেক সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। ফাইল চিত্র।

সকালে হামলা হল তাঁর বাড়িতে। রাতে অভিযুক্ত হয়ে গেলেন তিনিই। তিনি সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র। শনিবার সকালে তাঁর তালড্যাংরার বাড়িতে হামলার পরেই তৃণমূল নেতৃত্ব সিপিএমের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই ওই ঘটনা বলে ইঙ্গিত করেছিলেন। ঘটনাচক্রে, রাতে অমিয়বাবু হামলার অভিযোগ থানায় জানিয়ে আসার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় কর্মী দাবি করে এক ব্যক্তি পাল্টা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ দায়ের করলেন। তাতে অমিয়বাবুর নামে মামলা রুজু করল পুলিশ। যার জেরে ওই ঘটনা অন্যমাত্র পেয়ে গেল।

Advertisement

শনিবার বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ অমিয়বাবুর তালড্যাংরার বাড়িতে জনা ষাটেক সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। অমিয়বাবুর দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতা কর্মীদের উপস্থিতিতে দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়। ঘটনাটি নিয়ে রাতেই তিনি তালড্যাংরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই রাতেই এক ব্যক্তি নিজেকে সিপিএম কর্মী বলে দাবি করে অমিয়বাবুর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও তার জেরেই ক্ষুব্ধ হয়ে দলীয় কর্মীরাই তাঁর বাড়ি ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

Advertisement

কেন হামলা?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অভিযোগকারীর দাবি, তালড্যাংরার ২২ নম্বর জেলা পরিষদের আসনে সিমলাপাল থানা এলাকার এক মহিলাকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েই দলের কিছু নেতা-কর্মী অমিয়বাবুর সঙ্গে কথা বলতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেই সময় অমিয়বাবু তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা ওই নেতার বাড়ি ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। যদিও অভিযোগকারী ব্যক্তি ওই হামলাকারীদের সঙ্গে ছিলেন না বলেই জানিয়েছেন।

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “অমিয়বাবুর অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ঘটনাটি নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, “আমি আগেই বলেছিলাম অমিয়বাবুর বাড়িতে তৃণমূল হামলা চালায়নি। এখন প্রমাণ হয়ে গেল সিপিএমের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই ওই ঘটনা ঘটেছে।”

সব শুনে রবিবার অমিয়বাবু দাবি করেন, ‘‘যে ব্যক্তি নিজেকে সিপিএম কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে অভিযোগ করেছেন, তাঁর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্কই নেই। আমিও তাঁকে চিনি না। অভিযোগটি ভিত্তিহীন ও সাজানো।” পুলিশকে কটাক্ষ করে অমিয়বাবু অভিযোগ করেন, “রাজ্য পুলিশের হাল এখন উল্টে যাওয়া কচ্ছপের মতো। যে কোনও দিন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। পুলিশ তৃণমূলের অঙ্গুলী হেলনে চলছে। তৃণমূলের নির্দেশেই তাই আমার অভিযোগের যথাযথ তদন্তও পুলিশ করছে না।” তাঁর দাবি, হামলার দিন সন্ধ্যার মধ্যেই তাঁর বাড়ির সামনে মোতায়েন থাকা পুলিশ কর্মীদেরও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় পর্যন্তই অমিয়বাবুর বাড়িতে পুলিশ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তাই সময় পার হয়ে যাওয়ার পরেই পুলিশ কর্মীদের তুলে নেওয়া হয়।” তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ মানতে চাননি।

এ দিকে অমিয়বাবুর উপর হামলার প্রতিবাদে রবিবার বেলিয়াতোড় ও বড়জোড়ায় প্রতিবাদ সভা করে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বে আগামী শনিবার তালড্যাংরায় অমিয়বাবুর বাড়িতে হামলার প্রতিবাদে মিছিলের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement