ত্রিফলা কেলেঙ্কারিতে নাম ।
অকেজো ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের নিলাম ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে পুরুলিয়া পুরসভায়। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি আনোয়ারি বিবির ছেলে শেখ সাহিদ নিলামে বাতিস্তম্ভগুলি কেনায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসক দলেরই একাধিক পুরপ্রতিনিধি। যদিও পুরুলিয়া পুরসভার দাবি, আইন মেনেই সমস্ত নিলাম প্রক্রিয়াটি হয়েছে। কাউকে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
পুরুলিয়ার পুরপ্রধান তৃণমূলের নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘অভিযোগ সঠিক নয়। আইন মেনেই নিলাম করা হয়েছে। নিলামের আগে পাঁচ জন তিন লক্ষ টাকা করে জমা দিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রকাশ্য নিলামে যে কেউ অংশ নিতে পারতেন। পুরপ্রতিনিধির ছেলে হলে যে কেউ ঠিকাদারি করতে বা ব্যবসা করতে পারবেন না, এমন তো কোথাও বলা নেই। বরং দলের যে সমস্ত পুরপ্রতিনিধি বিষয়টি না জেনে মন্তব্য করেছেন, তা মোটেই কাম্য নয়।’’ পুরুলিয়া শহরের অকেজো বা প্রায় অকেজো হতে বসা ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের কেটে ফেলা অংশ নিলাম নিয়ে এই বিতর্ক শুরু হয়েছে। গত শনিবার ওই ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলির নিলাম হয়। পুরুলিয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধির ছেলে ছাড়া আর কি কোনও ব্যবসায়ী নেই শহরে? পুরো নিলাম প্রক্রিয়া প্রশ্নের মুখে পড়ছে। শাসকদলের পুরপ্রতিনিধিরাও অনেকে এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।’’ একই অভিযোগ বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়েরও।
পুরুলিয়া পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি রবিশঙ্কর দাস বলেন, ‘‘ওই ত্রিফলা মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। কিছু ত্রিফলা খারাপ হয়ে থাকলে তা সারানো যেত। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল তথা ২২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধির ছেলে নিলামে ওই ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলি পেয়েছে বলেই এত প্রশ্ন উঠেছে।’’ ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি সমীরণ রায়েরও মন্তব্য, ‘‘নিলামের প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। তবে নৈতিকতা আর দলের ভাবমূর্তির দিক থেকে এ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।’’
বিদ্যুৎ বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল আনোয়ারি বিবির সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর অন্যতম ছেলে শেখ সাবির বলেন, ‘‘আইন মেনেই ভাই নিলামে অংশগ্রহণ করে সবচেয়ে বেশি দাম দিয়ে বিকল ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলি পেয়েছে। আগে থেকেই সে ওই ব্যবসা করছে। পুরপ্রতিনিধির ছেলে বলে সে কি নিজের ব্যবসা ছেড়ে দেবে?’’