ছবি পিটিআই।
সুরেশ মাহাতো। কাশীপুর ব্লকের সিয়াদা গ্রামের বাসিন্দা। দিনমজুরের কাজে মহারাষ্ট্রের পুণেতে গিয়ে ‘লকডাউন’-এ আটকে পড়েছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বাঁকুড়ার কয়েকজন যুবকও। সুরেশ ফোনে জানালেন, খাবার যেটুকু সম্বল ছিল, তা ফুরিয়ে আসছে। তাই এখন তাঁরা এক বেলা পেটভরে খেয়ে অন্য বেলা উপোস দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম ১৪ এপ্রিল ‘লকডাউন’ উঠে যাবে, বাড়ি ফিরে যাব। কিন্তু ‘লকডাউন’ আরও বেড়েছে। জানি না, কী ভাবে দিন চলবে!’’
সবুজানন্দ মাহাতো। বাড়ি পুঞ্চায়। উত্তরপ্রদেশের মীর্জাপুর জেলার চুনার থানা এলাকায় বাঁকুড়া, মালদহ ও মুর্শিদাবাদের কয়েকজন যুবকের সঙ্গে কাজে গিয়ে তিনিও আটকে পড়েছেন। রবিবার সেখান থেকে সবুজানন্দ ফোনে বলেন, ‘‘চাল, ডাল কিছুই পাচ্ছি না। সঙ্গে যা ছিল, প্রায় শেষ হওয়ার মুখে। প্রশাসনের তরফে কেউ যোগাযোগ করেনি। গত কয়েক দিন ধরে ভরপেট খাচ্ছি না।’’ তাঁদের মতো বিভিন্ন রাজ্যে কাজে গিয়ে আটকে পড়া জেলার শ্রমিকদের সহায়তা পৌঁছে দিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে এ দিন বিকেলে টুইট করলেন বিধানসভায় কংগ্রেসের ডেপুটি লিডার তথা পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পুরুলিয়ার-সহ রাজ্যের অনেক জেলার প্রচুর শ্রমিক আটকে রয়েছেন। তাঁরা অনেকেই খাবার জোগাড় করে দেওয়ার আর্জি নিয়ে রোজ আমাকে ফোন করছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন রাজ্যকে বাংলার আটকে থাকা শ্রমিকদের সহায়তা দিতে চিঠিও দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে সহায়তা পৌঁছচ্ছে না। কারণ ওই শ্রমিকদের সম্পর্কে সেই সব রাজ্য সরকারের কাছে সে ভাবে কোনও তথ্য নেই।’’
নেপালবাবুর প্রস্তাব: কোন জেলার, কোন ব্লক এলাকা থেকে কত জন পরিযায়ী শ্রমিক কোথায় আটকে রয়েছেন, এই তথ্য বিডিও-রা দ্রুত তুলে আনতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রী যদি জেলাশাসকদের মাধ্যমে ভিন্ রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন, তবে তা ওই সব রাজ্যের সরকারের কাছে পাঠালে শ্রমিকেরা খাবার পাবেন। প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলিরও সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।’’
পুরুলিয়ার জেলা সভাধিপতি তথা জেলা তৃণমূলের বরিষ্ঠ সহ-সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নেপালবাবুর প্রস্তাব ভাল। অনেক আটকে পড়া শ্রমিক আমাকেও ফোন করে তাঁদের অসহায়তার কথা জানাচ্ছেন। তাঁদের সাহায্য পৌঁছে দেওয়া দরকার।’’