প্রতীকী ছবি
রাজস্থানের কোটা থেকে বাসে করে জেলায় ফিরেছেন ৫৪ পড়ুয়া। এর পরে তীর্থযাত্রী-শ্রমিক-পড়ুয়া-রোগী মিলিয়ে ১২০০ জন যাত্রী নিয়ে রাজস্থানের অজমের থেকে দিন কয়েক আগে বিশেষ যে ট্রেন এ রাজ্যে এসেছে, তাতেও ছিলেন বীরভূমের চার জন। এ বার তৃতীয় দফায় ভিন্ রাজ্য থেকে দু’টি ট্রেনে ফিরতে চলছেন জেলার ৬০০-রও বেশি মানুষ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বেঙ্গালুরুতে আটকে থাকা এ রাজ্যের পরিয়াযী শ্রমিক ও অন্যান্য যাত্রী মিলিয়ে মোট ২০৩০ জন যাত্রী নিয়ে শনিবারই একটি ট্রেন পুরুলিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। আজ রবিবার, সেই ট্রেনের পুরুলিয়া পৌঁছনোর কথা। ওই ট্রেনটিতেই রয়েছেন বীরভূমের ৫৯০ জন যাত্রী। অন্য দিকে, পঞ্জাব থেকে একটি ট্রেন ১২ তারিখে দুর্গাপুর স্টেশনে নামার কথা এই জেলার ৩৬ জনের। প্রশাসন সূত্রে খবর, পুরুলিয়া ও দুর্গাপুর স্টেশন থেকে সরকারি বাসে করে তাঁদের জেলায় আনা হবে। প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তার পরে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে সরকারি নিভৃতবাস বা গৃহ-পর্যবেক্ষণে তাঁদের রাখা হবে।
লকডাউন ঘোষণা করার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। আটকে রোগী, পড়ুয়া, পর্যটকও। সকলেই বাড়ি ফিরতে মরিয়া। ২০ এপ্রিলের পর থেকে ধাপে ধাপে বিভুঁইয়ে আটকে থাকাদের ফেরাতে পদক্ষেপ শুরু করছে সরকার। তারই অঙ্গ হিসাবে রাজ্যে আগামী কয়েক দিন বেশ কয়েকটি বিশেষ ট্রেন ঢুকছে। তবে ট্রেন আসার আগে থেকেই বীরভূম জেলা প্রশাসন হিমশিম খাচ্ছে এই জেলায় আটকে থাকা অন্য জেলার মানুষজনকে বাড়ি ফেরাতে। এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা বা পড়শি ঝাড়খণ্ড ও বিহারের যাঁরা কর্মসূত্রে বীরভূমে ছিলেন বা সরকারি নিভৃতবাসে ১৪ দিন কাটিয়েছেন, তাঁদের ফেরানো আছেই। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এই জেলাকে করিডর হিসাবে ব্যবহার করে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে পৌঁছতে চাওয়া মানুষ।
বীরভূমের এক প্রশাসনিক কর্তা বলছেন, ‘‘ওড়িশা থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর হয়ে বা ঝাড়খণ্ড থেকে আসানসোল রানিগঞ্জ হয়ে বীরভূমে ঢুকে পড়ছেন বহু মানুষ। শনিবারই পরিযায়ী শ্রমিক মিলিয়ে শতাধিক মানুষ জেলায় এসেছেন। বেকায়দায় থাকা সেই সব মানুষ সাহায্য চাইলে সেখান থেকে মুখ ফেরানোর উপায় থাকছে না প্রশাসনের। নজরে এলেই তাঁদেরকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে, দরকারে রিলিফ সেন্টারে রেখে সরকারি বাসে করে বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে গত কয়েক দিনে এমন ১৫০০ জনকে বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়েছে বীরভূম প্রশাসন। শনিবারই প্রথম বীরভূমে আটকে থাকা পড়শি ঝাড়খণ্ডের বেশ কয়েক জনকে ওই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছানো হয়েছে। যেহেতু পড়শি রাজ্যে যাতায়াত শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার বিকালে জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ, জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ এবং অন্যান্য আধিকারিকেরা বীরভূম ঝাড়খণ্ডের সীমানার দিঘুলি গিয়েছিলেন। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘যেহেতেু দু’দিক থেকেই বাস যাতায়াত করবে, জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সীমানায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’