Coronavirus

ছায়ার খোঁজে ভাঙছে লাইন

খাতড়ার আমডিহা গ্রামের অনাদি মাহাতো আট কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে হাজার টাকা তুলে এনেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৪০
Share:

ঘেঁষাঘেঁষি: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঝালদা শাখার সামনে সোমবার। নিজস্ব চিত্র

ব্যাঙ্কের সামনে ভিড় উপচে পড়ল সোমবারেও। পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার অনেক জায়গাতেই দেখা গেল, লাইনের ঠেসাঠেসি করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন গ্রাহকেরা।

Advertisement

বাঁকুড়ার সোনামুখীর নবাসন পঞ্চায়েতের বারুইবেড়া গ্রামের দুলালি গড়াই বলেন, ‘‘জনধন অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। না তুললেই নয়। মশলাপাতি কিনতে হবে।’’

রোদের মধ্যে দু’ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেছেন পাত্রসায়রের শোভন দাস চট্টোপাধ্যায়। বলেন, ‘‘টাকা ছাড়া, সংসার চলবে কী করে?’’

Advertisement

খাতড়ার আমডিহা গ্রামের অনাদি মাহাতো আট কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে হাজার টাকা তুলে এনেছেন। তার জন্য দু’ঘণ্টা দাঁড়াতে হয়েছে লাইনে। আবার ব্যাঙ্কে দীর্ঘ লাইন দেখে টাকা না তুলেই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ইঁদপুরের বাংলা গ্রামের তপন দাস।

পাত্রসায়র থানার ওসি প্রসেনজিৎ দাস জানান, ভিড় সামলাতে আজ হিমসিম খাচ্ছে পুলিশ। দুই জেলার অনেক ব্যাঙ্কেই লাইন সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। তাঁদের অনেকে জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ব্যাঙ্কের সামনে কোনও ছাউনি নেই। চড়া রোদে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। দূরে-দূরে গ্রাহকদের দাঁড় করাতে তাঁরা যতই চেষ্টা করুন না কেন, কিছুক্ষণ পরেই ছায়া দেখে সেখানে অনেকে চলে যাচ্ছেন। ফলে, সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না।

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের একটি ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষ জানান, সচরাচর পেনশন তোলার ভিড় বেশি থাকে প্রতি মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত। করোনা-পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্কের কর্মীরা পালা করে কাজ করছেন। ফলে, চাপ সামাল দিতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। তার উপরে জনধন যোজনার অ্যাকাউন্টে ত্রাণের টাকা দফায় দফায় ঢুকতে শুরু করেছে। অনেকে আসছেন সেই টাকা তুলতে। আরও অনেকে আসছেন, টাকা কবে ঢুকবে সেই খোঁজ নিতে। সবাই দাঁড়াচ্ছেন লাইনে।

এমন পরিস্থিতিতে আবার ভুয়ো খবর বাড়াচ্ছে সমস্যা। বিষ্ণুপুর শহরে পরিচারিকার কাজ করেন শেফালি বাউড়ি। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছি, টাকা তুলে না নিলে ফেরত চলে যাবে। তাই তাড়াতাড়ি এসেছি।’’ টাকা তোলার জন্য গ্রাহকদের ভিড় কিছুটা হবেই। কিন্তু জনধন যোজনার ত্রাণ নিয়ে গুজব বা অস্পষ্টতা দূর করা গেলে বাড়তি ভিড়ের চাপ কমতে পারে বলে আশা বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement