প্রতীকী ছবি
লক-ডাউনের কারণে কী ভাবে চলবে সংসার, ব্যবসার কী হবে? করোনা সংক্রমণে প্রিয়জনকে হারাতে হবে না তো? এমন গুচ্ছ প্রশ্ন অনেকের মানুষের মনে দানা বাঁধতে শুরু করেছে। কারও আবার ভর করছে একাকিত্ব। এতে নানা রকম মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আর ভিড় বাড়ছে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, প্যানিক ডিসওর্ডার, জেনারালাইজ অ্যাংজাইটি ডিসওর্ডার, ফোবিয়া, অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়া, নেশা করার প্রবণতা বৃদ্ধি-সহ একাধিক সমস্যা নিয়ে মানুষ চেম্বারে উপস্থিত হচ্ছেন। এই সমস্ত কিছুর পিছনে চিকিৎসকদের একাংশ করোনা আতঙ্ক এবং লক-ডাউনের কারণে মানুষকে গৃহবন্দি থাকাকেই কারণ হিসেবে ধরছেন।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক জিষ্ণু ভট্টাচার্যের দাবি, গত ২০ দিনে তাঁদের চেম্বারে এই ধরনের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ। এক মাস আগে হাসপাতালের আউটডোরে আসতেন ১০০ থেকে ১২০ জন। সেটা এখন বেড়ে হয়েছে ১৫০-১৭০ জন। রোগী বেড়েছে চেম্বারেও। আগে যেখানে মাসে গড়ে ৮০ থেকে ১০০ জন রোগী আসতেন, এখন সেটা প্রায় দ্বিগুণ ছুঁইছুঁই। প্রায় সমস্ত রোগী সাধারণ মানসিক রোগের উপসর্গ নিয়েই আসছেন। কিন্তু, সমস্যার পিছনের কারণ খুঁজতে গিয়ে করোনা আতঙ্ক এবং লক-ডাউনের প্রভাবই দেখছেন।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, লক-ডাউনের কারণে মানুষ গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন। ফলে নানা সময়ে নানা চিন্তা, অবসাদ আসছে। কেউ আবার চরম আতঙ্কিত। জিষ্ণুবাবুর কথায়, ‘‘যে কোনও মহামারির সময়েই বহু মানুষের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা যায়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যাঁরা মানসিক ভাবে শক্ত তাঁদের এই সমস্যা দেখা যায় না। তবে যাঁরা দুর্বল, তাঁদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায়।’’ চিকিৎসকদের পরামর্শ, এই ধরনের সমস্যা এড়াতে সাধারণ মানুষকে কিছু জিনিস মেনে চলা উচিত। যেমন, করোনা সংক্রান্ত ঠিক তথ্য নজরে রাখা। কিন্তু, তার অর্থ এই নয় যে প্রতি মিনিটে পৃথিবীর কোন দেশে সংক্রমণ কত বৃদ্ধি পেল সেই সব দেখা।
এ সবের বাইরে নিজেকে ঘরের মধ্যে ব্যস্ত রাখা এবং আনন্দে রাখা, পরিবারের সকল সদস্যদের সুনির্দিষ্ট রুটিন করে নেওয়া এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। এই সময় শিশুদের উপরে কোনও প্রকার চাপ দেওয়া থেকেও বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ‘‘শিশুরা সব সময় বাড়ির মধ্যে থাকতে বিরক্ত হয়। তাই এই সময় তাদের জোর করে পড়াতে বসানো বা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও কাজ চাপ দিয়ে করানো উচিত নয়। জিষ্ণুবাবু বলেন, ‘‘গুরুজনদের বাড়ির শিশুদের সময় দেওয়া উচিত। প্রত্যেক শিশুর কোনও না কোনও সৃজনশীল প্রতিভা থাকে। এই সময় তাদের সেই সমস্ত কাজ করতে দেওয়া উচিত।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)