প্রতীকী ছবি
‘লকডাউন’-এর মেয়াদ যে বাড়ছে, তা জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার। এ দিকে, করোনা-প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আসার কোনও ইঙ্গিত এখনও চোখে পড়েনি। এই পরিস্থিতিতে ছেলে বা মেয়েকে বিয়ের পিঁড়িতে বসানো ঠিক হবে কি না, তা ভেবে পাচ্ছে না অনেক বর এবং কনে পক্ষ। অনেকে আবার বিয়ের দিন ঠিক করেও তা বাতিল করে দিয়েছেন।
বৈশাখ পড়তেই বঙ্গে বিয়ের মরসুম শুরু হয়। পাত্র-পাত্রীর পরিবারে শুরু হয় চরম ব্যস্ততা। পুরোহিত, কেটারার, ফুলের ব্যবসায়ী— সকলেই তাকিয়ে থাকেন বিয়ের মরসুমের দিকে। করোনা-আতঙ্কে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। এখন বিয়ের অনুষ্ঠান করা ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে রাজ্যের অনেক জায়গার মতো পুরুলিয়াতেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে পাত্র-পাত্রীপক্ষে।
অনেকের মতোই ছেলের বিয়ে নিয়ে বিভ্রান্ত ঝালদা ১ ব্লকের মাঘা গ্রামের কমল পরামানিক। বছরকয়েক আগে তাঁর বড় ছেলে সন্তোষ সিআইএসএফ-এ চাকরি পেয়েছেন। আগামী ২২ বৈশাখ (৫ মে) ছেলের বিয়ের দেবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন কমলবাবু। পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে বিয়ের দিন পিছিয়ে দেওয়া ছাড়া, উপায় নেই বলে জানালেন তিনি।
আড়শা ব্লকের গৌরাদাগ গ্রামের সৃষ্টিধর মাহাতোর ছেলের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল আগামী ২০এপ্রিল। সৃষ্টিধরবাবু বলেন, ‘‘যা চলছে, তাতে বিয়ে পিছিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।’’
ওই ব্লকেরই অশ্বিনী কুমারের মেয়ের বিয়ের পাকা কথা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কবে বিয়ের দিন ঠিক করতে পারছেন না অশ্বিনীবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘পরিস্থিতির জেরে শুধু দিনটা ঠিক করা হয়ে উঠছে না। কী যে হবে কে জানে!’’
সমস্যায় পড়েছেন কেটারিং ও ডেকরেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত লোকজন। ঝালদার এক ডেকরেটরের কথায়, ‘‘বৈশাখ পড়লেই বিয়ের ধুম পড়ে যায়। সারা বছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করি। এ বছর সব লোকসান হয়ে গেল। অনেকেই অগ্রিম দিয়েও অনুষ্ঠান বাতিল করছেন।’’
উদ্বেগ পুরোহিতকুলেও। ঝালদা শহরের বাসিন্দা পুরোহিত পরেশনাথ আচার্য্যের কথায়, ‘‘অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে আমাদের কাছে ছুটে আসছেন। এ বার কী যে হবে কে জানে!’’