Coronavirus

পাখি হলে ঘরে আটকে থাকতে হত না আমাকে

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৯
Share:

ক’দিন আগেও রোজ রোজ স্কুল, টিউশন, গানের ক্লাসের মাঝে এক দু’দিন ছুটি পেলে বেশ ভালই লাগত। কিন্তু গত প্রায় কুড়ি দিন ধরে ঘরবন্দি অবস্থায় এই লম্বা ছুটি একদমই ভাল লাগছে না। সারাদিন ঘরে সময় যেন কাটছেই না।

Advertisement

আমার বাড়ি সিউড়ির সমন্বয়পল্লিতে। আগে সকাল হলেই স্কুলে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো লেগে যেত। এখন মাছওয়ালা আনাজওয়ালা কাকুদের ডাকে সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠি। ব্রাশ করে ছাদে যাই। সেখানে কিছুক্ষণ দাদুর সাথে যোগ ব্যায়াম করে নীচে নেমে এসে একটু গানের চর্চা করি। তারপর চা-বিস্কুট খেয়ে পড়তে বসি। সকাল ন’টা নাগাদ একটু খেয়ে ফুল গাছে জল দিই। গোটা ব্যাপারটাই চলে বেশ ঢিমেতালে। এরপর কখনও দাদার সাথে লুডো খেলি, কখনও বা টিভি দেখি। এই সব করেই সময় কাটাই।

আবার দুপুরে স্নান করে বিশ্রাম। সারাদিন ধরে বিশ্রাম নেওয়াটাও এখন কেমন যেন একঘেয়ে হয়ে গেছে। বাড়ির বাইরে বেরোনোর কোনও সুযোগ নেই। তাই ছাদেই বিকেলবেলা একটু নিজের মতো খেলে বেড়াই। খেলার মাঝেই পাশের বাড়ি বন্ধুর সাথে গল্প করি। কখনও আবার আকাশের পাখি দেখি। ওদের দেখে মনে হয়, পাখি হলে আমাকেও আর ঘরে আটকে থাকতে হতো না। এখন ফোনটা একটু বেশিক্ষণ হাতে পাই। তাই সন্ধেবেলা বন্ধুদের সাথে একটু ফোনে গল্প করি। আবার ফোনে ফোনেই স্কুলের থেকে বাড়ির কাজ দেওয়া হয়। সন্ধ্যাগুলো সেই কাজ করতেই কেটে যায়।

Advertisement

পড়া শেষেও অনেক সময়। একটু মনের মত ছবি আঁকি। আবার কোনও কোনও দিন সিনেমা দেখি বা গল্পের বই পড়ি। এরপর আবার রাতের খাবার, তারপর আবার ঘুম। কিছুদিন আগেও পড়তে যেতে হত। সেখানে সব বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হত, গল্প হত। গানের শিক্ষক আসতেন বাড়িতে। নতুন নতুন গান শেখা হত। এখন সে সবই বন্ধ। পুরনো পড়া নতুন করে পড়ছি, পুরনো গান বারবার গাইছি। জানিনা কবে এই একঘেয়েমি কাটবে। তবে যে দিন কাটবে সেদিন বন্ধুদের সঙ্গে অনেক অনেক গল্প করব। অনেক মজা করব। কিন্তু মা বলে দিয়েছে তার জন্য সুস্থ থাকতে হবে। তাই এখন বাড়ির বাইরে যাওয়া একদম বন্ধ।

লেখিকা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement