কাজের ‘পরিবেশ’ নেই
Tarapith

তারাপীঠে অ্যান্টিজেন টেস্ট বন্ধ

স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি, তারাপীঠে আসা পুণ্যার্থী এবং লজ কর্মীদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করার জন্য স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের চরম অসুবিধার মধ্যে কাজ করতে হয়েছে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২০ ০২:৩৭
Share:

ফাইল চিত্র।

উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে তারাপীঠে আসা দর্শনার্থীদের র‌্যাপিড আন্টিজেন টেস্ট করা বন্ধ রাখল স্বাস্থ্য দফতর। অথচ বুধবারই তারাপীঠে ঘুরতে আসা বাইরের দর্শনার্থীদের মধ্যে অ্যান্টিজেন টেস্টে ১১ জনের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছিল।

Advertisement

স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি, তারাপীঠে আসা পুণ্যার্থী এবং লজ কর্মীদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করার জন্য স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের চরম অসুবিধার মধ্যে কাজ করতে হয়েছে। উপযুক্ত জায়গা না পেয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা পিপিই পরে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থেকেই পুণ্যার্থীদের টেস্ট করেছেন। এর ফলে একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের আরও দাবি, রাস্তার ধারে অ্যান্টিজেন টেস্ট করার জন্য চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের বিদ্রুপ করেছেন পুণ্যার্থীদের একাংশ। অনেক লজ মালিকও অ্যান্টিডেন টেস্টে আপত্তি তুলেছেন।

রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘জেলা পুলিশ সুপারের কাছ থেকে মোবাইলে মেসেজ পেয়ে তারাপীঠে বিভিন্ন লজে আসা দর্শনার্থী এবং লজ কর্মীদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছিল। দুর্গাপুজো থেকে শুরু হয়েছিল এই টেস্ট। শুক্রবার অর্থাৎ লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত চালু রাখার কথা ছিল। বুধবার পর্যন্ত অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়। বৃহস্পতিবার থেকে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।’’ তিনি জানান, রামপুরহাট ২ ব্লকের স্বাস্থ্যকর্মীরা টেস্ট করছিলেন। কিন্তু কাজের পরিবেশ না থাকায় এবং উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনকেও সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কাজের কোনও পরিবেশ নেই ওখানে। রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নীচে রাস্তার ধুলো উড়ছে, এমন পরিবেশের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের এই কাজ করতে হচ্ছিল। যে ভাবে অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছিল, তা স্বাস্থ্যসম্মত নয়।’’ সূত্রের খবর, টেস্ট করাতে গিয়ে আপত্তির মুখে পড়া এবং উপযুক্ত পরিবেশ না থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। সব দিক বিবেচনা করেই র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তারাপীঠে ধীরে ধীরে হলেও পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। দীর্ঘদিন বাদে লজগুলিও বুকিং পেতে শুরু করেছে। কিন্তু, বুধবার যে ভাবে ১১ জন পুণ্যার্থীর কোভিড পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে, তাতে অ্যান্টিজেন টেস্ট বন্ধ করে দিলে হিতে বিপরীত হবে না তো—এই প্রশ্নও ঘোরাফেরা করছে স্বাস্থ্য দফতরের আনাচেকানাচে। যে ১১ জনের করোনা ধরা পড়েছে, তাঁরা পুরুলিয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ওই তিন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের আক্রান্তদের সম্বন্ধে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আক্রান্তদের সকলকেই হোম আইসলোশনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ সবের মধ্যেই আজ, শুক্রবার চতুর্দশীর দিন মা তারার আর্বিভাব তিথি ঘিরে প্রাচীন প্রথা মেনে মা তারাকে ভোর থেকে সন্ধ্যাআরতি পর্যন্ত মূল মন্দিরের বাইরে বিরামমঞ্চে রাখা হবে। আর্বিভাব তিথি ঘিরে তারাপীঠে দর্শনার্থীদের ভিড় হয়। করোনা আবগে মন্দির কমিটির এই সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও মন্দির কমিটি মনে করছে, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় তেমন ভিড় হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement