পথে বেরিয়েও নেই মাস্ক। শিক্ষা দিতে ঘিরে ধরেছে বহুরূপী ‘করোনা’। সাঁইথিয়ায় রবিবার। নিজস্ব চিত্র
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। শনিবারই একদিনে ৭৫ জন নতুন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে জেলায়। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের পর স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্যও বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় গড়া হচ্ছে সেফ হোম। দফতর সূত্রে খবর, সামনে থেকে থেকে আক্রান্তদের পরিষেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসক, নার্স-সহ একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে আগামীদিনে সেফ হোমেও শয্যাসঙ্কট হতে পারে। তখন আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে আইসোলেশনে থাকতে পারেন, সে জন্যই এমন ভাবনা।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের শনিবার প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী মোট আক্রান্তের সংখ্যা একলাফে বেড়ে হয়েছে ৭৫। প্রথম দিকে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় সংক্রমণের সংখ্যা বেশি হলেও সিউড়িতে জেলা সংশোধনাগারে বন্দিদের পঞ্চাশেরও বেশি বন্দিদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তেই বীরভূম স্বাস্থ্য জেলাতেও রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গত কয়েকদিনে এক বন্দি-সহ বীরভূমে স্বাস্থ্য জেলায় দুই কোভিড আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, আক্রান্তদের অধিকাংশই যেহেতু উপসর্গহীন, তাই তাঁদের আলাদা রাখতে সেফ হোম রাখা প্রয়োজন। না হলে সংক্রমণ আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন ধরলে বীরভূমে আক্রান্তের সংখ্যা ন’শো ছাড়িয়ে গিয়েছে। উপসর্গ যুক্ত জটিল করোনা আক্রান্তদের জন্য জেলায় দুটি হাসপাতাল রয়েছে। একটি রামপুরহাটে অন্যটি বোলপুরে। সেখানে শয্যা সংখ্যা ৮০টি(আরও ৪০টি শয্যা বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে)। উপসর্গহীনদের জন্য জেলায় তিনটি সেফ হোমে ৪৫০ শয্যা রয়েছে। তবে প্রতিদিন যে হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে ওই সেফ হোমগুলিতেও শয্যা ভরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আক্রান্তদের সুস্থ করে তোলার ভার যাঁদের উপর সেই স্বাস্থ্যকর্মীরাই যদি চিকিৎসা না পান তাহলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে। স্বাস্থ্য দফতর ঠিক সেই কারণেই স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সেফ হোম গড়ার ভাবনা নিয়েছে। প্রতিটি থানা এলাকায় সেফ হোম গড়ার যেমন ভাবনা নিয়েছে জেলা পুলিশও।
ইতিমধ্যেই বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ ভবনের একটা অংশে উপসর্গহীন কোভ়িড আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সেফ হোম গড়া হয়েছে। সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলছেন, ‘‘শুধু সিউড়ি নয় বোলপুরেও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য সেই রকমই একটি সেফ হোম গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)