সিউড়ি কোট বাজার এলাকায় ভিড়। নিজস্ব চিত্র
ছবিটা ফের বদলাল। ফের পথেঘাটে অবাঞ্ছিত ভিড় দেখা গেল জেলা সদরেই। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজোড়া ‘লকডাউন’-এর মধ্যেই যাবতীয় সতর্কবার্তাকে থোড়াই কেয়ার করে স্রেফ ঘুরে বেড়ানোর মেজাজে বাইরে বেরিয়ে পড়লেন অনেকে। বাজারও করলেন চুটিয়ে।
অথচ ‘লকডাউন’ চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী বারবার অনুরোধ করেছেন, কোনও কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকার জন্য। কিন্তু তার পরেও জনতার একাংশের মধ্যে সচেতনতার অভাব। মঙ্গল ও বুধবার পুলিশ রাস্তায় নেমে সক্রিয় হওয়ার পরে নানা মহল থেকে সমালোচনা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের ভূমিকায় ফল মিলেছিল। তাদের লাঠির ভয়ে, সিউড়ি শহরের রাস্তাঘাট কার্যত ফাঁকা হয়ে যায়। যে কয়েক জন বেরিয়েছিলেন, তাঁরা অত্যাবশকীয় পণ্য কেনার জন্য কিংবা তাঁরা জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। তবে, বিভিন্ন জায়গায় অপ্রয়োজনে বলপ্রয়োগের অভিযোগও উঠছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। অনেকেই কাজের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে পুলিশের মারের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহকে চিঠিও দেন এসইউসি-র জেলা নেতৃত্ব।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে অপ্রয়োজনে বলপ্রয়োগ না-করার নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশ ছিল, আবশ্যিক পণ্যগুলির হোম ডেলিভারি এবং বাজার সচল রাখতে দায়িত্ব নিতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে। সব থানাকে এই পরিষেবা বাধাহীন রাখতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। তার পর থেকে পুলিশকে আর লাঠি হাতে সে ভাবে জনতাকে হটাতে দেখা যায়নি। ফলে, আবার এক শ্রেণির মানুষ প্রশাসন, চিকিৎসক, বিশেযজ্ঞদের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে পথেঘাটে ভিড় করতে শুরু করেছেন। অন্তত তেমনই ছবি ধরা পড়েছে শুক্রবার, সিউড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকায়। শহরের মোড়ে মোড়ে মানুষের জমায়েত দেখা গিয়েছে। বাজারেও ছিল প্রচুর ভিড়। আনাজপাতি কেনার ধুম যেমন চোখে পড়েষে তেমনই ভিড় ছিল মুদি-দোকানে। কিছু লোক তো নিয়ম করে প্রায় রোজই বাজারে যাচ্ছেন।
পুলিশেরও সক্রিয়তা ছিল অন্য দিনগুলির তুলনায় কম। ফলে, বিভিন্ন পাড়ায় জটলা পাকিয়ে আড্ডা মারতেও দেখা গিয়েছে অনেককে। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে—পুলিশ সক্রিয়তা না দেখালে কি মানুষ আদৌ ঘরবন্দি থাকবেন।