মাস্ক ছাড়াই স্কুলে কন্যাশ্রীর ফর্মপূরণে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
করোনা প্রতিষেধক পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘প্রায়োরিটি গ্রুপ’ বা অগ্রাধিকার প্রাপ্ত মানুষজন এবং রাজ্য-কেন্দ্র ভাগাভাগি অতীত হতে চলেছে। আগামী সোমবার, ২১ জুন থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিককে বিনামূল্যে করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, কী ভাবে প্রতিষেধক দেওয়া হবে, রেজিস্ট্রেশন থেকে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি— এই পর্বে কো-উইন অ্যাপে নতুন কোনও সংযোজন বা বিয়োজন হচ্ছে কি না, জেলায় কতগুলি কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন কত জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে, এ সব ব্যাপারে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে কোনও নির্দেশিকা বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত নেই। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের ডোজ়ও মজুত নেই বলে সূত্রের খবর।
কিন্তু, ঘোষণা মাফিক টিকাকরণ পর্ব শুরু হলে বিপুল সংখ্যক মানুষকে প্রতিষেধক দিতে হবে ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় কোভিড ভ্যাকসিনের নোডাল অফিসার তথা ডেপুটি
সিএমওএইচ ৩ জয়ন্ত শুকুল বলেন, ‘‘আশা করি, শুক্র বা শনিবারের মধ্যেই এ ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশিকা চলে আসবে।’’ সূত্রের খবর, এরই মধ্যে ছোট পর্দার অভিনেতা, নৃত্যশিল্পী, বাচিক শিল্পী, যাত্রাশিল্পী, নাট্যকর্মী এবং এই সব সাংস্কৃতিক মাধ্যমের সঙ্গে জুড়ে থাকা সহকারী ও টেকনিশিয়ানদেরও করোনা প্রতিষেধক প্রাপকদের অগ্রাধিকারের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। রাজ্যের তরফে এই নির্দেশ পৌঁছেছে জেলায়। এ ছাড়াও ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদেরও চিহ্নিত করে প্রতিষেধক প্রাপকদের তালিকায় আনতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ পর্যন্ত গোটা জেলায় (রামপুরহাট ও বীরভূম স্বাস্থ্য জেলা মিলিয়ে) মোট প্রতিষেধক প্রাপকের সংখ্যা (প্রথম ডোজ়) ৫ লক্ষ ৮৭ হাজার ৯৮২ জন। তাঁদের মধ্যে জেলায় ‘প্রায়োরিটি গ্রুপ’-ভুক্ত ১ লক্ষ ৩২ হাজার ১৪৮ জন প্রথম ডোজ় পেয়েছেন। দু’টি করে ডোজ় পেয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৮৬ জন। কিন্তু, ১৮-র বেশি বয়সি সকলকে টিকাকরণের আওতায় আনতে হলে লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে ১৯ লক্ষ। জেলা পরিসংখ্যান দফতরের তথ্য অন্তত সে কথাই বলছে।
২০১১ সালের জনসুমারি অনুযায়ী বীরভূমে লোকসংখ্যা ৩৫ লক্ষ ২ হাজার ৪ জন। এখনও জনগণনার তথ্য হাতে না এলেও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ধরলে বীরভূমে
এখন আনুমানিক জনসংখ্যা হওয়া উচিত প্রায় ৩৯ লক্ষ ৮৫ হাজার। এর মধ্য থেকে ১৮ পর্যন্ত বয়সসীমায় থাকতে পারেন ১৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫০৮ জন। অর্থাৎ ২৪ লক্ষ ৮৭ হাজারের বেশি মানুষ ১৮ ঊর্ধ্ব ভ্যাকসিন প্রাপকদের দলে। সেখানে যদি এখন পর্যন্ত ৫ লক্ষের কিছু বেশি প্রথম ডোজ় পেয়ে থাকেন, তা হলে প্রতিষেধক না পাওয়াদের দলে রয়েছেন ১৯ লক্ষেরও বেশি! এ ছাড়াও সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি মানুষের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া বাকি। ফলে একটা বড়সড় কর্মযজ্ঞ যে বাকি, তা মানছেন স্বাস্থ্যকর্তারাই। তাঁদের মতে, মসৃণ ভাবে এত লোকের টিকাকরণ করতে গেলে প্রতিষেধক সরবরাহ যথাযথ থাকতেই হবে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কো-উইন অ্যাপে কিছু সংযোজন ও পরিমার্জন হয়েছে। যাঁদের নাম দু’বার নথিবদ্ধ হয়েছে, তাঁদের চিহ্নিত করে ২০ তারিখের মধ্যে আর্কাইভে সরিয়ে দিতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। সেই কাজ চলছে।