উদ্বেগজনক: করোনা-সংক্রমণ বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে পথে ভিড়ও। অনেকের মুখে দেখা যাচ্ছে না মাস্কও। শনিবার রামপুরহাটের রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
জেলাজুড়েই বাড়ছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে বহু নমুনা পাঠানো হলেও রিপোর্ট না আসায় চিন্তা বাড়ছে স্বাস্থ্য দফতরের।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা থেকে মোট ৪ হাজার ৬২২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এর মধ্যে ১৩৩৯টি রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায় নি। তার মধ্যে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৬৭টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট দীর্ঘদিন থেকে পাওয়া যায়নি। নাইসেড থেকে এখনও ৬৫২টি রিপোর্ট আসার কথা। দুর্গাপুরের সনকা থেকে প্রায় ৪০০ রিপোর্ট আসার কথা।
এত রিপোর্ট না আসায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যকর্তারা। কারণ যাঁদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তাদের রিপোর্ট দ্রুত এলে আক্রান্তদের আলাদা রেখে চিকিৎসা দ্রুত শুরু করানো সম্ভব। কিন্তু রিপোর্ট আসতে দেরি হলে ভাইরাসের বাহকদের থেকে সংক্রমণ আরও অনেকের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বর্তমানে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার থেকে করোনা সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে জেলায়। ফের রামপুরহাট শহরে করোনা আক্রান্তর হদিশ মিলেছে। এই নিয়ে রামপুরহাট শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হল সাত। শুক্রবার সন্ধ্যায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কলকাতার স্কুল অফ ট্রফিক্যাল মেডিসিন থেকে একই পরিবারের চার জনের করোনা পজিটিভ পাঠানো হয়। তাঁদের বাড়ি রামপুরহাট পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাকলামাঠ এলাকায়। আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন ৮ ও ১০ বছর বয়সী কিশোরী আছে। বাকী দুজন ৩২ থেকে ৩৫ বছর বয়সী মহিলা আছেন। আক্রান্তদের সকলকেই রামপুরহাটের নার্সিং হোমে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই পরিবারেরই দিল্লি ফেরত এক যুবক ও তাঁর মেয়ের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট মেলে। শুক্রবার রাতে আক্রান্ত যুবকের স্ত্রী এবং ছোট মেয়ে সহ আক্রান্ত যুবকের শ্যালিকা ও শ্যালিকার মেয়ের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।
পাঁচ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ছ’জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জেলা প্রশাসন থেকে করোনা আক্রান্ত পরিবারের বাড়ি-সহ আশপাশ এলাকার কয়েকটি বাড়ি কন্টেনমেন্ট জোন বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বাড়ির আশপাশ বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ওই ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি নতুন করে স্যানিটাইজ করা হবে বলে পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন অশ্বিনী তিওয়ারি জানান।
বোলপুর শ্রীনিকেতন ব্লক এলাকাতেও নতুন করে তিন পরিযায়ী শ্রমিকের শরীরে করোনা সংক্রমণ মিলেছে। তাঁরা কয়েক মাস আগে কাজের উদ্দেশ্যে মহারাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। ২৮ মে ফেরার পরে তাঁরা সরকারি নিভৃতবাসে ছিলেন। এ দিন দুপুরে তিন জনের রিপোর্ট আসার পরে তাঁদের বোলপুরের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই তিন যুবকের সংস্পর্শে আসা পরিবারের সদস্যদের চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। ওই তিন শ্রমিকদের বাড়ির এলাকাকে আপাতত কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করার কাজ চলছে বলে জানান বিডিও শেখর সাঁই।