প্রতীকী ছবি।
বয়স্ক মানুষদের টিকাকরণের ক্ষেত্রে এ বার নতুন নির্দেশিকা দিল স্বাস্থ্য দফতর। ৩১ মে রাজ্যের প্রতিটি স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ওই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, বয়স্ক মানুষদের নিকটবর্তী স্থানে টিকার ব্যবস্থা করতে হবে। নির্দেশিকা মেনে চলার রূপরেখা তৈরি করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন রামপুরহাট এবং বীরভূম দুটি স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিকরা।
বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ৩১ মে পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার ৫৯২ জন করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এর মধ্যে ৬০ বছরের উপরে আছেন ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৯৮৯ জন। ৪৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সি আছেন ১ লক্ষ ৮৮ হাজার ৫৮২ জন। পেশার তাগিদে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়, এমন লোকজনকে করোনা টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে টিকার প্রথম ডোজ এখনও পর্যাপ্ত নয়। ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে বহু বয়স্ক মানুষ এখনও টিকা পাননি। টিকা নিতে কোথাও কোথাও আগে লাইনে দাঁড়িয়ে পুরসভার অফিসে আধার কার্ড অথবা সচিত্র ভোটার কার্ড জমা দিতে হচ্ছে। পুরসভা অফিস থেকে টোকেন পাওয়ার পরে আবার সেই টোকেন নিয়ে টিকাপ্রদান করা হচ্ছে এমন স্কুল বা কমিউনিটি সেন্টারে গিয়েও লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বয়সের ভারে হাঁটা চলার শক্তি নেই বা শারীরিক দিক থেকে অক্ষম এমন বয়স্ক লোকজনরা কী ভাবে টিকা নেবেন, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। টিকা নিতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে অনেক বয়স্ক মানুষ কষ্ট বা হয়রানিও এড়িয়ে যেতে চাইছিলেন। এখন তাঁদের দাবি, বয়স্ক মানুষদের জন্য টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও টিকা গ্রহণের হয়রানি দূর করা হোক।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। করোনা সংক্রমণের কারণে অসুস্থতা এবং মৃত্যুর হারও বেশি। সেই কারণেই বয়স্কদের টিকা সুনিশ্চিতকরণ করার ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের প্রতিটি স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বয়স্ক নাগরিকদের টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে নিকটবর্তী কমিউনিটি ঘর, পঞ্চায়েত ভবন, স্কুল ভবন, বৃদ্ধাশ্রমের মতো কোনও কাছাকাছি ভবনে টিকা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান জানান, বয়স্ক মানুষদের অনেকে হাইপার টেনশন, রক্তচাপ, শরীরে শর্করা জনিত রোগ ছাড়াও বার্ধক্য জনিত অনেক রোগে টিকা নিতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের বসার জন্য প্রতিটি টিকাগ্রহণ কেন্দ্রে আলাদা ব্যবস্থা করা আছে। এ বার নতুন নির্দেশিকা মেনে প্রস্তুতি নেওয়া হবে। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ত্রিদিব মুস্তাফি বলছেন, ‘‘বয়স্ক মানুষের ভিড়ে অনেক সময় শারীরিক ভাবে সক্ষম লোকজনও টিকার লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছিলেন। এর ফলে প্রকৃত বয়স্ক লোকজনদের অসুবিধা হচ্ছিল। এ বার নিকটবর্তী টিকাগ্রহণ কেন্দ্রেই ব্যবস্থা করা হবে।’’