ঠাসাঠাসি বিষ্ণুপুরে। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাঁকুড়ায় আসার দু’দিন আগে মঙ্গলবার বিষ্ণুপুরে দলীয় কর্মীদের নিয়ে চা-চক্রে যোগ দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁকে চিনতে পেরে পথ চলতি অনেকেই এগিয়ে এলেন। অনেকে হাত বাড়ালেন। তবে দিলীপবাবু কারও সঙ্গে হাত মেলাননি। দূর থেকে হাত জোড় করে নমস্কার জানালেন। তবে সদ্য করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা দিলীপবাবুকে ঘিরে এ দিন যে ভাবে দলীয় নেতা-কর্মীরা ভিড় করেছিলেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপির বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য-বিধি না মানার অভিযোগ তুলেছেন।
এ দিন ভোরে বিষ্ণুপুরের কলেজরোড থেকে কর্মী-সমর্থদের সঙ্গে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন দিলীপবাবু। পথে তাঁকে দেখে অনেক সাধারণ মানুষ এগিয়ে যান। খবর পেয়ে রাস্তার ধারে অনেকে দাঁড়িয়ে যান। পরে রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের একটি জায়গায় কর্মীদের নিয়ে দিলীপবাবু বসে পড়েন। সঙ্গে ছিলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হরকালী প্রতিহার, জেলার সাংগঠনিক দুই সাধারণ সম্পাদক— অশোক ডাকুয়া ও অমর শাখা প্রমুখ।
সেখানেই মাটির ভাঁড়ে চা নিয়ে আসেন কর্মীরা। বিধানসভা ভোটের কেমন প্রস্তুতি, তা নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেন চা খেতে খেতে। দেখতে দেখতে দলীয় কর্মীরা ছাড়াও, বাসস্ট্যান্ডে আসা সাধারণ লোকজনও ভিড় করেন। দোকান ফেলে চলে আসেন দোকানদারেরাও। ভিড়ের মধ্যে কারও কারও মুখে মাস্ক-ও ছিল না। দিলীপবাবু-সহ নেতারা অবশ্য অধিকাংশ সময়ে মাস্ক পরে ছিলেন।
এ দিন সন্ধ্যার মুখে বাঁকুড়ায় জয়পুর, সাঁইতাড়া হয়ে ময়নাপুরে বিজেপি কর্মীরা মোটরবাইক মিছিল করেন। সেখানে বক্তব্য রাখেন দিলীপবাবু। সেখানেও ভিড় ভালই হয়েছিল। মঞ্চে কারও মুখে মাস্ক থাকলেও, কারও তা ছিল না। দর্শকদের ঠাসা ভিড় নিয়েও অনেকে চিন্তিত।
বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যালের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি নেতারা করোনা সতর্কতা মানছেন কই? কেউ মাস্ক পরছেন না, কেউ বা ভিড়ের মধ্যে বসে থাকছেন। এ দিনও তাই হয়েছে। নিজের এবং অন্যদের তাঁরা ক্ষতি করছেন।’’
দিলীপবাবু পাশেই বসেছিলেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। পরে তিনি দাবি করেন, ‘‘২২ অক্টোবর দিলীপদার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তার পরে এত দিন গিয়েছে। তবে আমরা স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই চলছি। মাস্কও প্রয়োজন না পড়লে খোলা হয়নি।’’
চা-চক্রে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে দিলীপবাবু বলেন, “আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার সব ক’টি আসনেই বিজেপি জয়ী হবে। সকালে রাস্তায় আসার সময় বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজনের হাসিমুখেই ছিল পরিবর্তনের ইঙ্গিত। এটা দেখব বলেই আমি বিষ্ণুপুর এসেছি।” তাঁর দাবি, এই বিষ্ণুপুরেই শাসকদলের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস ছিল না সাধারণ মানুষের। এখন প্রকাশ্যে মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করছেন। বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যালের পাল্টা দাবি, ‘‘বাংলা জুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে উপকৃত মানুষ বিজেপির দিবাস্বপ্ন ভোটেই ভেঙে দেবেন। বিজেপি বরং উস্কানি দেওয়া বন্ধ করুক।’’