প্রতীকী ছবি
করোনা আক্রান্তের নিরিখে ডাবল সেঞ্চুরি করেই ফেলল বীরভূম!
সোমবারই জেলা প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে এক দিনে মোট ২৯ জন করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছে। তাঁদের মধ্যে আবার বীরভূম স্বাস্থ্যজেলারই ২৩ জন! এক দিনে এর আগে বীরভূমে এত বেশি সংখ্যক করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলেনি। প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবারই জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৯৯ ছুঁয়ে গিয়েছিল। সোমবারের পরে সংখ্যাটা ২০০ পেরিয়ে গেল।
রামপুরহাট শহরেও ফের তিন জনের রিপোর্ট করোনা পজ়িটিভ এসেছে। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা সূত্রের খবর, আক্রান্তদের বাড়ি শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে।
করোনা নিশ্চিত করার আরটি-পিসিআর টেস্টের ব্যবস্থা হওয়ার পরে সিউড়ি জেলা হাসপাতাল দুই করোনা আক্রান্তকে চিহ্নিত করেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার থেকে লালারসের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সোমবারই প্রথম দুই রোগীর লালারসের নমুনা পজ়িটিভ হয়েছে। কিন্তু, এ সব ছাপিয়ে এক দিনে ২৯ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট চিন্তা বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরেরর এক কর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘উদ্বেগ বেড়েছে সন্দেহ নেই। তবে আশার কথা, ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে তাঁদের প্রায় সকলেই জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় সরকারি নিভৃতবাসে আছেন।’’ তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে যাঁরা বাড়িতে নিভৃতবাসে ছিলেন, তাঁদের সংস্পর্শে যে বা যাঁরা এসেছেন এবং সরকারি নিভৃতবাসে ঢোকার আগে ও নিভৃতবাসে আক্রান্তদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সকলেরই লালারসের নমুনা পরীক্ষা হবে।
বীরভূম স্বাস্থ্য জেলা ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে সিউড়ি, বোলপুর, ইলামবাজার, নানুর-সহ প্রায় সব ব্লকের লোক রয়েছে। তবে ৮ জনই খয়রাশোল ব্লকের। তার মধ্যে এক শিশু-সহ পাঁচ জন একই পরিবারের। এঁরা ২৮ মে মুম্বই থেকে ফিরেছিলেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের জেলায় ফেরা শুরু হতে দুই স্বাস্থ্য জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সংক্রমণের রেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছিল, কিন্তু তার মধ্যেও রবিবার রাত পর্যন্ত গ্রিন জ়োনে ছিল খয়রাশোল। রবিবার কাঁকরতলা থানা এলাকার পলপাই গ্রামের এক বছর উনিশের তরুণের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পরই সেই তকমা মুছে যায়। হরিয়ানা থেকে ফিরেছিলেন তিনি। সিউড়ি হাসপাতালে যে দুই রোগীর শরীরে করোনার সংক্রমণ রয়েছে, তাঁদেরও এক জন খয়রাশোলের বাসিন্দা। আক্রান্তদেরকে কোভিড হাসপাতালে পাঠানোর বন্দোবস্ত করছে প্রশাসন।
রামপুরহাট শহরে গত ৩১ মে করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট মিলেছিল ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক যুবকের। তিনি দিল্লিতে দর্জির কাজ করতেন। তাঁর সংস্পর্শে আসা মোট ১১ জনের লালারস সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দফতর। তাঁদের মধ্যে সোমবার তিন জনের করোনা ধরা পড়েছে। এর আগে ওই একই যুবকের সংস্পর্শে আসা আরও ৫ জনের করোনা পজ়িটিভ মিলেছে। সকলে একই পরিবারের। এখনও দু’জনের টেস্টের রিপোর্ট আসেনি। আক্রান্তেরা সকলেই রামপুরহাটের কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
১৬ নম্ন্বর ওয়ার্ডের যে এলাকায় একই পরিবারের ৯ জন সদস্যের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, সেই এলাকা অনেক আগেই গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বা কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে থেকে বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকার চার-পাঁচটি বাড়ি বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সুকান্ত সরকার এলাকায় জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজের দেখভাল করছেন।