সিউড়ির কেঁদুলি গ্রাম সংলগ্ন ঝাড়খণ্ড সীমানায় চালকদের সচেতনতা প্রচার,
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে শনিবার সকাল থেকেই বীরভূম জেলার ঝাড়খণ্ড সীমানাবর্তী এলাকায় যাতায়াতের মূল পয়েন্টগুলিতে চেকিং করল পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর। ঝাড়খণ্ড থেকে বীরভূমের বিভিন্ন থানা এলাকায় যাঁরা বিভিন্ন কাজে আসছেন, তাঁদের কেউ জ্বর, সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন কিনা—তা খুঁটিয়ে দেখতেই এ দিনের যৌথ তল্লাশি।
বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে বাংলার সীমানা বিন্দুতে কেউ জ্বরের লক্ষণ নিয়ে এলে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে জানিয়েছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। জেলা পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের পক্ষ থেকে এই পয়েন্টগুলিতে নিয়মিত নজরদারি চলে। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে যৌথ চেকিং। কাঁকরতলা, সিউড়ি, লোকপুর রাজনগর, মহম্মদবাজার, রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই— এই সব থানা এলাকায় ঝাড়খণ্ড থেকে বীরভূমে ঢোকার ১২টি রাস্তা রয়েছে। সেখানেই যৌথ পর্যবেক্ষেণ চলেছে।
জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানিয়েছেন, যৌথ নজরদারির পাশাপাশি করোনা নিয়ে সচেতনতা প্রচারে ব্যানার লাগানো হয়েছে। মাইকিং করা হচ্ছে। একই কথা জানিয়েছেন বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি।
সূত্রের খবর, বীরভূমের সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের ১২টি সীমানাবিন্দু হচ্ছে কাঁকরতলা থানার চন্দ্রবাদ, লোকপুর থানার ধাসুনিয়া, রাজনগরের যাত্রীবাজার টোলগেট, সিউড়ির কেঁদুলি, মহম্মদবাজারেরের মহেশখোলা, ছাগলকুড়ি, শ্রীকান্তপুর ও ডানজোনা, মুরারই ১ ব্লকের দুলান্ডি, নলহাটি ১ ব্লকের নাচপাহাড়ি, সুলতানপুর এবং রামপুরহাটের হস্তিকোন্দা ও সুরিচুয়া। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া রুখতে সবচেয়ে প্রয়োজন সচেতনতা। ঝড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ১২টি পয়েন্টে নজরদারির সময় এই বিষয়টিই বোঝানো হচ্ছে।
এ দিন সকাল থেকেই প্রতিটি পয়েন্টে পৌঁছে যান স্থানীয় থানার ওসি, আইসি-সহ পুলিশকর্মী এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। কোথাও কোথাও ব্লক প্রশাসনের কর্তারাও ছিলেন। ঝাড়খণ্ড থেকে সীমানা-বিন্দু পার হওয়ার সময় পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপস্থিতিতে মোটরবাইক, ছোট গাড়ি, ভারী যান, বাসযাত্রী, এমনকি পথচারীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও খোঁজ নেওয়া হয়। কারও জ্বর সর্দি কাশি বা শ্বাসকষ্ট হয়েছে কিনা, পরীক্ষা করা হয়। খোঁজ নেওয়া তাঁদের কেউ বিদেশ থেকে এসেছেন কিনা বা তাঁদের কোনও আত্মীয়পরিজন কেউ বাইরে থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কিনা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কী করণীয়, সে ব্যাপারে সচেতনতা প্রচার চালানো হয়।
এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, ‘‘প্রয়োজনে নম্বর লিখে রাখা হয়েছে।’’ মুরারইয়ের মতো দু-একটি জায়গায় মাস্ক বিতরণ করা হয়। যৌথ অভিযান চালানোর সময় মহম্মদবাজারের ছাগলকুড়ির কাছাকাছি গুজরাত থেকে ফেরা একটি পরিবারের শিশু সর্দিকাশিতে ভুগছে শুনে সেখানেও গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। তবে দিনভর তল্লাসি চালিয়ে নজরদারিতে রাখার মতো কাউকে পাওয়া গিয়েছে বলে খবর নেই—জানাচ্ছেন বীরভূম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিকেরা।