ফাইল চিত্র
নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জনসমাবেশ এড়িয়ে চলতে বলা হচ্ছে। বন্ধ করা হয়েছে রাজ্যের স্কুল কলেজগুলি। পুরুলিয়া আর বাঁকুড়ায় মেলার ভরা মরসুম শুরু হতে এখনও কিছুটা দেরি রয়েছে বটে, কিন্তু পুরভোটের হাওয়া গরম। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় কিছু বিধিনিষেধ জারি হয়েছে সভা-সমাবেশের উপরে। তার উপরে করোনাভাইরাস বিপাকে ফেলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে। কেউ কর্মীদের বলছে, ফোনে বেশির ভাগ কাজ সারতে। কেউ আবার সতর্ক হয়ে বাইরে বেরনোর পক্ষে।
জয়পুরের প্রাক্তন বিধায়ক রামকৃষ্ণ মাহাতোর মৃত্যুদিনে, প্রতি বছর ১৬ মার্চ গাড়াফুসড় পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন মাঠে হয় তিন দিনের ‘রামকৃষ্ণ-পলাশ মেলা’। এ বছর তা বাতিল করা হয়েছে। সোমবার চাষমোড়ে প্রয়াত নেতার মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাঁর ছেলে তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। ছিলেন জয়পুরের বর্তমান বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতোও। শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘এলাকার মানুষের আবেগ এই মেলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা এই ব্যাপারে আবার ভাবনাচিন্তা করব।’’
রবিবারই পুরুলিয়ায় তৃণমূলের ‘স্বীকৃতি সম্মান’ কর্মসূচি শেষ হয়ে গিয়েছে বলে দল সূত্রের খবর। পরবর্তী ধাপের কর্মসূচি শুরু হচ্ছে ২০ মার্চ থেকে। ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’ নামের ওই কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় বড় মিছিল হওয়ার কথা। শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যের সমস্ত বিধানসভা এলাকায় এই কর্মসূচি হওয়ার কথা। আমরা রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে এই সংক্রান্ত নির্দেশ নেব।’’ ২০ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত জমায়েত বাতিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল বলেন, ‘‘ছোট-বড় সমস্ত জমায়েত বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্মীদের বলেছি, জনসংযোগ করতে গেলে খুব বেশি লোক নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই।’’
পুরুলিয়া জেলা বিজেপি সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী জানান, মঙ্গলবার তাঁরা একটি বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে জানিয়ে দেওয়া হবে, পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত কোনও জমায়েত করা যাবে না। দলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, ‘‘পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হয়, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছি আমরা।’’
পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলছেন, ‘‘পুরসভা এলাকায় জমায়েত বন্ধ রাখা হয়েছে। ফোনে যা করার, করতে বলেছি কর্মীদের।’’
তবে বাঁকুড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক অজিত পতি জানাচ্ছেন, ২৯ মার্চ তাঁদের একটি জমায়েত রয়েছে। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দলের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় আবার বলছেন, ‘‘আমরা অহেতুক আতঙ্ক ছড়াব না। কিন্তু সব বন্ধ করে ঘরে বসে থাকায় বিশ্বাসী নই। জীবন কি চলছে না?’’ তিনি জানান, দলীয় কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সরকার যে সমস্ত বিধি জারি করেছে, তা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
খেলার মাঠেও সতর্কতায় জোর দিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। পুরুলিয়ার মানভূম ক্রীড়া সংস্থার তরফে পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্রিকেট লিগের খেলা ছিল। কিন্তু সেটা প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য বন্ধ। ফুটবলের সিলেকশন ট্রায়াল আছে। যাবতীয় সতর্কতা মেনে তা করা হবে।’’