কলকাতায় পাঁচ মাসের শিশুর দেহে এইচএমপি ভাইরাসের হদিস। —প্রতীকী চিত্র।
এ বার কলকাতায় পাঁচ মাসের এক শিশুর দেহে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এর হদিস মিলল। তবে সুস্থ হয়ে ওই শিশু বাড়ি ফিরে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরের শেষে মুম্বই থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে কলকাতায় এসেছিল শিশুটি। এখানে এসে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভর্তি করানো হয় বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে। সেখানে কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। সোমবারই বেঙ্গালুরুর দুই শিশুর শরীরে ওই ভাইরাসের হদিস পাওয়ার খবর জানা গিয়েছে। অহমদাবাদের এক শিশুও সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, জ্বর এবং কাশির মতো সাধারণ কিছু উপসর্গ ছিল ওই শিশুর। পরীক্ষার পর ধরা পড়ে সে এইচএমপিভি-তে আক্রান্ত। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনও শারীরিক পরিস্থিতি ওই শিশুর ছিল না। তবে সব রকম সাবধানতা অবলম্বন করেই চিকিৎসা করা হয়েছে।
সোমবার সকালেই বেঙ্গালুরুর দুই শিশুর শরীরে এইচএমপিভি-র সংক্রমণের খবর মিলেছে। প্রথমে আট মাসের এক শিশুর শরীরে ওই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। পরে তিন মাসের আর একটি শিশুর শরীরেও ভাইরাসের হদিস পাওয়া যায়। পরে অহমদাবাদের দু’মাস বয়সি এক শিশুর শরীরেও মেলে একই ভাইরাস। খবর প্রকাশ্যে আসতেই আতঙ্ক ছড়ায়। তবে কেন্দ্র জানিয়েছে, চিনে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণের কোনও যোগসূত্র নেই। কর্নাটক সরকার জানিয়েছে, ইচএমপিভি আক্রান্ত দুই শিশুরই অবস্থা স্থিতিশীল। তাদের মধ্যে তিন মাসের শিশুটিকে ইতিমধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য জনও সেরে ওঠার মুখে।
সম্প্রতি চিনে এইচএমপিভি-র একটি রূপের সংক্রমণ বেড়েছে। তার পর থেকেই উদ্বেগ দানা বেঁধেছে ভারত-সহ অন্যান্য দেশে। অনেকেই বছর চারেক আগের করোনা-আবহের কথা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তবে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ভারতে অতীতেও এইচএমপিভি-র সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। তবে এই ভাইরাসটির কোনও রূপান্তর হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। চিনে ভাইরাসটির যে রূপ ছড়িয়ে পড়েছে, সেটির গঠনের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য মেলেনি। ফলে এটি ভাইরাসের চিনা রূপ, না কি স্বাভাবিক এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। সাধারণ এইচএমপিভি সংক্রমণে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, ঠান্ডা লাগা, ঘাম হওয়া, মাথা ধরা, পেশি ও গাঁটগুলিতে ব্যথা, ক্লান্তি এবং খিদে কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। সাধারণত, ১৩ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা যায়। তবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরেও এই ভাইরাস বাসা বাঁধতে পারে।