মাস্ক ছাড়াই রাস্তায়। সিউড়িতে শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
সুস্থতার হার স্বস্তি দিলেও করোনা সংক্রমণের ছবিটা দিন দিন খারাপ হচ্ছে বীরভূমে। আমজনতা তো বটেই, কোভিডের হানা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না সরকারি আমলা, পুলিশকর্মী, চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা। এমনটা চলতে থাকলে কোভিড পরিস্থিতি সামলাবেন কে বা কারা, এই প্রশ্নেই উদ্বেগ বাড়ছে জেলা প্রশাসনের অন্দরে।
সিউড়ি জেলা হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে খবর, চক্ষু, প্রসূতি, জেনারেল মেডিসিন, ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক কোভিড পজ়িটিভ হয়ে আইসোলেশনে আছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘এখনও পরিষেবা ভেঙে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে এক সঙ্গে বেশ কয়েক জন চিকিৎসক আক্রান্ত হলে অসুবিধা তো হবেই।’’ বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি জানান, রোগী থেকে চিকিৎসকেরা নিজেদের সরিয়ে রাখতে পারবেন না। ফলে তাঁদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকেই। অসুস্থ হলে আইসোলেশনে রাখছেন নিজেদের। সুস্থ হয়েছে ফের কাজে যোগ দিচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বোলপুর কোভিড হাসপাতালের এক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ঝঁকি না নিয়ে তাঁকে কলকাতা পাঠানো হয়েছে। কারণ তাঁর কো-মর্বিডিটি রয়েছে। জেলা প্রশাসন ভবনের ছবিটাও আলাদা নয়। জানা গিয়েছে, একজন প্রবেশনারি অফিসার, বেশ কয়েকজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট করোনা আক্রান্ত। তাঁরা হোম আইসোলেশনে আছেনই। তাঁদের সংস্পর্শে আসা আধিকারিকদের অনেকেই বাড়ি থেকে কাজ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু, তাতে ঠিকমতো কাজ করাই
মুশকিল হয়ে পড়ছে। ফলে জেলা প্রশাসন ভবন অনেকটাই ফাঁকা। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোভিড আক্রান্ত হতে হবে ধরেই আমাদের এগোতে হবে। তবে এর মধ্যেও যতটা সাবধানে থাকা যায়।’’
চিকিৎসকদের একটা অংশ জানাচ্ছেন, সাবধানতা বিষয়টিই বড় নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এত প্রচার, আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পরেও সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। বাজারে-হাটে, দোকানে, রাস্তায় মাস্ক ছাড়া ঘুরতে দেখা যাচ্ছে বহু মানুষকে। অনেকেরই মাস্ক মুখ ঢাকার বদলে গলায় বা থুতনিতে ঝোলানো। অথচ মাস্কই যে সংক্রমণ ঠেকানোর সবচেয়ে বড় হাতিয়ার, তা বারবার বলছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞেরা। এর ফলে পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী,
চিকিৎসক, প্রশাসনিক কর্তা বা কর্মী, যাঁদের প্রতিনিয়ত আম জনতার সংস্পর্শে আসতে হয়, তাঁরাও আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মনে করছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর।