প্রতীকী ছবি
জেলায় করোনা সংক্রমণের গতি কমলেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিনই। উদ্বেগ বাড়িয়ে এ বার কোভিড সংক্রমণের থাবা পৌঁছে গেল জেলাশাসকের বাংলো পর্যন্ত। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারই জেলাশাসকের বাংলোয় কর্মরত তিন কর্মীর (ডেইলি রেটেড ওয়ার্কার) শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। কর্মীরা করোনা আক্রন্ত শোনার পরই জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু নিজেকে আইসোলেশনে রেখেছেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে ওই কর্মীরা সরাসরি সংস্পর্শে আসেননি ঠিকই, কিন্তু আমার সঙ্গে যেহেতু গোটা প্রশাসন জুড়ে, ঝুঁকি আছে ধরে নিয়েই সামনের কয়েকটা দিন বাড়ি থেকেই কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
খোদ জেলাশাসকের বাংলোয় করোনা হানা দেওয়ায় চরম উৎকণ্ঠায় গোটা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে পঞ্চাশ জনেরও বেশি ডেইলি রেটেড ওয়ার্কার রয়েছেন। তাঁরা বিভিন্ন দফতরে কাজ করার পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসকের বাংলোয় কাজ করেন। ফলে তাঁদের দফতরের আধিকারিকরা তো বটেই, কাজ নিয়ে প্রশাসন ভবনে আসা অনেক মানুষের সংস্পর্শে আসেন। আনলক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর ওই কর্মীদের কেউ সংক্রমণের শিকার হয়েছেন কি না জানতে ১৯ জুলাই থেকে দফায় দফায় তাঁদের সিউড়ি হাসপাতালে পাঠিয়ে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
সিউড়ি জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ তারিখে করা ত্রিশজন কর্মীর মধ্যে জেলাশাসকের বাংলোয় কর্মরত তিন জনের লালারসের নমুনায় করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। তাঁদের কেউ মালির কাজ করতেন কেউ অন্য কাজ করতেন। এখনও বাকিদের রিপোর্ট পাওয়া বাকি। সেটাই যথেষ্ট উৎকণ্ঠায় রেখেছে প্রশাসনের কর্তাদের। আগামী দিনে অন্য কারও শরীরে করোনাভাইরাস মিললে জেলা প্রশাসনের আর কোন কোন দফতর জুড়ে যাবে উদ্বেগ সেটা নিয়েই। উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে আক্রান্ত তিন কর্মীর কারও জেলার বাইরে যাওয়ার বা করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসার কোনও ইতিহাস না থাকায়। তবে কিছুটা হলেও স্বস্তির বিষয়, যাঁদের লালরসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল তার মধ্যে জেলাশাসকের রাধুঁনিও ছিলেন। তিনি আক্রান্ত হননি।
শুধু জেলাশাসকের বাংলোতেই নয়, করোনা হানা দিয়েছে শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডেও। সেখানকার বাসিন্দা আক্রান্ত যুবক কলকাতা পুলিশে কর্মরাত। গত ৯ তারিখ বাড়িতে আসার দিন কয়েক পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯ তারিখ লালারসের নমুনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন তিনিও। বৃহস্পতিবার তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমার বাংলোর কর্মীরা ছাড়াও শহরে আরও আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ওই এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।’’