বাঁকুড়ায় বামেদের আইন অমান্য কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র।
বামেদের আইন অমান্য কর্মসূচিতে সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রের মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
কেন্দ্রের শ্রম কোড, বিদ্যুৎ আইন ও নয়া পরিবহণ আইন বাতিলের দাবিতে বাম শ্রমিক ও কৃষক সংগঠনগুলির তরফে বাঁকুড়ার জেলাশাসকের দফতরে আইন অমান্য কর্মসূচি নেওয়া হয়। সেখানে অমিয় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতি, প্রবীণ আরএসপি নেতা গঙ্গা গোস্বামী প্রমুখ।
কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের সামনে অমিয় বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে কী হয়েছে সে সব আমরা সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমাদের দেশের ভূখণ্ডের কোথাও এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে, এটা আমরা কল্পনা করতে পারি না।’’
এরপরেই তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘ওদের সব দলের জামা পতাকা খুলে দিয়ে জনগণের একসঙ্গে জোট বেঁধে পিটিয়ে মেরে দেওয়া উচিত। একটাকেও বাঁচিয়ে রাখা উচিত নয়। তবে এই মেয়েরা শান্তি পাবে। এমনটা আর কেউ করতে সাহস পাবে না। আমি তো অবাক হয়ে যাই তৃণমূল এখনও কথা বলছে। পদত্যাগ করে চলে যাওয়া উচিত। এক মুহূর্ত শাসন ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়।’’
এ দিন বিকেলে সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে বাঁকুড়ার কেরানিবাঁধে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
অমিয়র মন্তব্য নিয়ে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘উনি কী বলেছেন, আমার জানা নেই। তবে সন্দেশখালির ঘটনায় অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া খুব জরুরি।’’
তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বিজেপি ও সিপিএম দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের হার্মাদদের মতোই কথা বলেছেন অমিয় পাত্র৷ আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যা রোখার দায়িত্ব পুলিশের। সেখানে সাধারণ মানুষকে উস্কানি দিয়ে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে বিজেপি ও সিপিএম দু’দলই। ওনার এমন মন্তব্যকে কোনও ভাবেই সমর্থন করা যায় না।’’
যদিও নিজের মন্তব্যে অমিয় অনড়। তিনি বলেন, ‘‘সন্দেশখালির ঘটনায় যারা অপরাধী তারা কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী হতে পারে বলে আমি মনে করি না। যে মহিলারা আজ সেখানে পথে নেমে আন্দোলন করছেন তাঁরাও হয়ত কোনও সময় তৃণমূলের সভা-মিছিলে গিয়েছেন। ফলে এটা বেঁচে থাকার লড়াই। পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেই আমি ওই মন্তব্য করেছি। এই ধরনের ঘটনায় জনরোষ তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক।’’