নিজস্ব চিত্র।
পাকা বাড়ি আছে। পরিবারে সিভিক পুলিশের চাকরি আছে। বাড়িতে আছে চারচাকা গাড়িও। আবাস যোজনার তালিকায় ঠাঁই হল সেই পরিবারের সদস্যের। অথচ, ভাঙাচোরা বাড়িতে থেকে কাগজের ঠোঙা বিক্রি করে দিন গুজরান করা এক প্রতিবন্ধীর নাম বাদ পড়ল উপভোক্তাদের সর্বশেষ তালিকা থেকে! এমন অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হল পুরুলিয়ায়।-১ ব্লকের গাড়াফুসড়া পঞ্চায়েত এলাকায়।
এ ব্যাপারে পুরুলিয়া-১ ব্লকের বিডিও অনিরুদ্ধ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ জেলাশাসক রজত নন্দাও বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
দ্বিতীয় দফার ‘আবাস প্লাস’ যোজনার তালিকা ঘিরে উত্তাল রাজ্য-রাজ্যনীতি। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে ‘স্বজনপোষণ’-এর নালিশ জমা পড়েছে। অভিযোগ, আবাস যোজনার যাঁরা সত্যিকারের উপভোক্তা, তালিকায় তাঁদের জায়গা হয়নি। অথচ, আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল যাঁরা, তাঁদের নাম জ্বলজ্বল করছে তালিকায়। বাদ পড়ে যাচ্ছেন যোগ্য উপভোক্তারা। প্রশাসনের নজরদারিতে দফায় দফায় ঝাড়াই-বাছাই করে বহু অনুপযুক্তের নাম বাদ গেলেও ‘বেনোজল’ যে থেকে গিয়েছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ বলে দাবি করলেন রুদড়া গ্রামের বাসিন্দা অসীম রায়।
অসীম প্রতিবন্ধী। কাগজের ঠোঙা বেচে কোনও রকমে তাঁর সংসার চলে। শারীরিক ভাবে অক্ষমতার শংসাপত্রটি বার করে তিনি জানান, আবাস যোজনার তালিকায় শুরুতে তাঁর নামও ছিল। আশাকর্মীরা যখন তথ্য যাচাইয়ের জন্য এসেছিলেন, আধার কার্ড ও জব কার্ড সবই দেখিয়েছিলেন তিনি। তার পর দিন দুয়েক আগে নতুন যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে অসীমের নাম। তিনি বলেন, ‘‘কী কারণে আমি বাদ পড়েছি, জানি না। ব্লক প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি।’’ অসীমের দাবি, তাঁর গ্রামেই এমন বহু লোক রয়েছে, যাঁদের পাকা বাড়ি, গাড়ি, জমিজমা থাকা সত্ত্বেও তালিকায় নাম রয়েছে।
এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধান কবিতা মাহাতো বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। যে সব যোগ্যরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের কথা পুনর্বিবেচনা করার জন্য আমি বিডিও সাহেবকে অনুরোধ করব। যাতে আবার সার্ভে (সমীক্ষা) করা হয়।’’