বিশ্বভারতীয় উপাচার্য উপস্থিত থাকছেন না বিকল্প পৌষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। ফাইল ছবি।
পৌষমেলা নিয়ে শান্তিনিকেতন বেনজির ঘটনা ঘটার বিরাম নেই। এ বার বিকল্প পৌষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়েও বিতর্ক তৈরি হল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে তৈরি বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি তদন্ত করছে, তাঁদের সঙ্গে এক মঞ্চে থাকবেন না। এতে সরাসরি রাজনীতিকরণের অভিযোগ উঠছে। পাশাপাশি যে ভাষায় বিবৃতিটি জারি করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
২৩ ডিসেম্বর, শুক্রবার, বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প পৌষমেলার উদ্বোধনে থাকছেন রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়ক-আমলাদের পাশাপাশি বিশ্বভারতীর প্রাক্তন শিক্ষকরাও৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বোলপুর পুরসভার পক্ষ থেকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু, মেলা কমিটির পক্ষ থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে নাম নেই বিদ্যুতের। এই বিষয়টিকে উল্লেখ করে ‘বিস্ফোরক’ বিবৃতি দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বড় বড় হরফে জানিয়ে দেওয়া হল, বিকল্প পৌষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’দের সঙ্গে উপাচার্য এক মঞ্চে বসবেন না।
প্রসঙ্গত, বিকল্প পৌষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও চন্দ্রনাথ সিংহ। বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বভারতীর দুই প্রাক্তন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত ও সবুজকলি সেন, প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর, বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, সাংসদ শতাব্দী রায়, জেলাশাসক বিধান রায়, পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী প্রমুখ।
বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’দের সঙ্গে এক মঞ্চে বসবেন না উপাচার্য বিদ্যুৎ। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তর বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্ত চলছে৷ প্রাক্তন উপাচার্য সবুজকলি সেনকে বহিষ্কার করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া, বিকল্প পৌষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের মধ্যে রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়ক-নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধেই সিবিআই-ইডি তদন্ত করছে। বিদ্যুৎ কাদের নিশানা করলেন?
প্রশ্ন উঠছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইডি, সিবিআই, তার অর্থ কি অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে যাওয়া? না কি কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করছে বলেই আপত্তি উপাচার্য বিদ্যুতের? ঘটনাচক্রে, কেন্দ্রীয় এজেন্সির ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে সরব বিজেপি-বিরোধী প্রায় সবক’টি দলই। তাদের দাবি, বিরোধীদের নিশানা করতেই তাঁদের বিরুদ্ধে লাগাতার কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু উপাচার্যের গরহাজিরার কারণ হিসাবে যে ভাবে লিখিত বিবৃতিতে এ সব লেখা হল, তা নিয়ে স্বভাবতই অবাক অনেকেই।