রাসমঞ্চের সামনে সেই নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সংরক্ষিত মন্দিরের বাইরে ‘হাইমাস্ট’ আলো বসাতে চেয়েছিল পুরসভা। নির্মাণ সংক্রান্ত নিয়মের প্রশ্নে আপত্তি তুলেছিল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই)। এ বার তাদের বিরুদ্ধেই সে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ তুললেন বিষ্ণুপুরবাসীর একাংশ।
মল্লরাজাদের প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন ঐতিহ্যমণ্ডিত মন্দির জোড়বাংলা ও রাসমঞ্চ চত্বরে নির্মাণ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মহকুমাশাসকের (বিষ্ণুপুর) দফতরে পুরবাসী চিঠি দিয়ে দাবি করেছেন, সংরক্ষিত মন্দিরের ১০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে কেউ নির্মাণ কাজ করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে এএসআই-এর অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক বলে উল্লেখ রয়েছে। অথচ, এএসআই নিজেরাই কী ভাবে মন্দির চত্বরে নির্মাণ কাজ করছে? এতে মন্দিরের একাংশ আড়ালে চলে যাচ্ছে, সৌন্দর্যহানি হচ্ছে বলেও তাঁদের অভিযোগ।
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কলকাতা মণ্ডলের কনজারভেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট রোহিত কুমার দাবি করেন, “পর্যটকদের কথা ভেবেই মন্দিরের এক কোণে পানীয় জল, শৌচালয় নির্মাণ করা হচ্ছে। রাসমঞ্চের সামনের টিকিট কাউন্টারটিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এক ধারে। তাতে পর্যটকদের কাছে মন্দিরের দৃশ্য মোটেই নষ্ট হবে না। প্রতিটি ক্ষেত্রে উচ্চতা আট ফুটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। সব কিছুই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের অনুমতি নিয়ে হচ্ছে।’’
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, “বিষ্ণুপুরের সংরক্ষিত মন্দির রাসমঞ্চ ও জোড়বাংলা মন্দির চত্বরে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ কিছু নির্মাণ কাজ করছে। স্থানীয় মানুষজনের দাবি, মন্দির বিভাগ যদি নির্মাণ করতে পারে, তবে তাঁদের নির্মাণে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে? আবেদনটি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি।’’
স্থানীয় ট্যুরিস্ট গাইড অসিত দাস বলেন, “পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ জোড় বাংলা ও রাসমঞ্চ চত্বরে নির্মাণ কাজ করে দৃশ্য-দূষণ করছেন বলে মনে করছেন পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।” শুক্রবার ওড়িশা থেকে রাসমঞ্চ দেখতে এসেছিলেন কনক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘২০০৭ সালে যখন এসেছিলাম, তখন এখানকার খোলামেলা পরিবেশের আলাদা সৌন্দর্য ছিল। এখন মন্দিরের পাশে নির্মাণ দেখে মন খারাপ হচ্ছে। এটা না হলেই ভাল হত।’’