পথে: রামপুরহাটে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে মিছিল কংগ্রেসের। নিজস্ব চিত্র
পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের ব্যবস্থা করার দাবিতে বুধবার জেলাজুড়ে অবরোধ-বিক্ষোভ করল কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় সরকারের গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনায় বীরভূম জেলার সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য এ দিন কংগ্রেসের তরফে জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিকের কাছে দাবি জানানো হয়।
কংগ্রেসের দাবি, জেলায় মুরারই ও নলহাটিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা বেশি। ফিরে আসার পরে এলাকায় কাজ না পেয়ে তাঁদের অনেকেই ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের দাবিতে এ দিন রামপুরহাটের মহকুমাশাসকের কাছে আবেদন করেন হাঁসনের বিধায়ক মিল্টন রশিদ। তিনি বলেন, ‘‘বীরভূমে কত জন পরিযায়ী শ্রমিক আছেন তার সঠিক তথ্য পেতে আরটিআই করেছি।’’ বিধায়ক বলেন, “গরিব কল্যাণ রোজাগার যোজনায় পরিযায়ী শ্রমিকেরা জীবিকা নির্বাহের লক্ষ্যে ১২৫ দিন কাজ পাবেন। বীরভূমে পঁচিশ হাজারের অনেক বেশি পরিযায়ী শ্রমিক লকডাউন হওয়ার কারণে তাদের নিজ গ্রামে ফিরে এসেছেন এবং তখন থেকেই তাঁরা বেকার, অসহায় ও নিরাশ হয়ে রয়েছেন।” মুরারইয়ের পরিযায়ী শ্রমিক আব্দুর রব, দুলাল সেখরা বলেন, ‘‘প্রায় পাঁচ মাস ধরে বেকার অবস্থায় রয়েছি। ১০০ দিনের কাজও ঠিক মত পাচ্ছি না। কোনও রকমে সংসার চলছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পের আওতায় আমরা যদি পড়তাম তাহলেও কাজ পেতাম।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, কোনও জেলায় ২৫,০০০ বা তার বেশি শ্রমিক ফিরলে ওই প্রকল্পের আওতায় পড়বে সেই জেলা। এ দিন রামপুরহাটে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে মিছিলও করেন মিল্টন। যদিও সেই মিছিলে দূরত্ব বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। মিল্টনের বক্তব্য, ‘‘অনেকদিন পর দলের কর্মসূচি থাকায় কিছু কর্মী উৎসাহের বশে ভিড় করেন। তবে বেশিরভাগই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলেছেন।’’
বোলপুর শহরেও বুধবার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা। এ দিন বোলপুরে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের হয়ে মিছিলটি শহর পরিক্রমা করে বোলপুর প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানেই কিছুক্ষণ বোলপুর-সিউড়ি রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা। তারপর তাঁরা বোলপুরের মহকুমাশাসকের কাছে পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের ব্যবস্থা করা-সহ ৭ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। উপস্থিত ছিলেন জেলার সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা, কংগ্রেস সেবা দলের চেয়ারম্যান দেবকুমার দত্ত, কংগ্রেস শহর সভাপতি শিবকিঙ্কর সাহা-সহ অনেকেই।
জেলা সদর সিউড়িতেও জেলা পরিষদের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা। জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরকারি আমলাদের কটূক্তি করার অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সঞ্জয় অধিকারীর বিরুদ্ধে। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমার দল বা আমার সংস্কৃতি ওটা নয়। আমি ইতিমধ্যেই জেলাশাসককে বার্তা পাঠিয়ে নিঃস্বার্থ ক্ষমা চেয়েছি।’’