বিদ্যুৎ-বিল ‘বেঠিক’, দাবি নেপালের

তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা গ্রাহকদের বিল পাঠানোর সময় তিন মাসের মিটার রিডিং নিয়ে বিল পাঠায়। গলদ রয়েছে এই ব্যবস্থার মধ্যেই।’’ কোথায় গলদ রয়েছে তা-ও ব্যাখ্যা করেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৫
Share:

নেপাল মাহাতো। —ফাইল চিত্র

এক সঙ্গে তিন মাসের ‘মিটার রিডিং’ নিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ খরচের বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিল আদায়ের এই ব্যবস্থা বদলের দাবিতে চলতি মাসেই তাঁরা আন্দোলনে নামতে চলেছেন বলে মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি দিলেন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধানসভায় কংগ্রেসের ডেপুটি লিডার নেপাল মাহাতো।

Advertisement

তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা গ্রাহকদের বিল পাঠানোর সময় তিন মাসের মিটার রিডিং নিয়ে বিল পাঠায়। গলদ রয়েছে এই ব্যবস্থার মধ্যেই।’’ কোথায় গলদ রয়েছে তা-ও ব্যাখ্যা করেন তিনি। তাঁর দাবি, ১০২ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৫.২৬ টাকা। পরের ৭৮ ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৫.৮৬ টাকা। অর্থাৎ কোনও গ্রাহক ১০২ ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে তাঁকে ইউনিট প্রতি ৫.৮৬ টাকা হিসেবে দাম দিতে হবে। এ ভাবে বিদ্যুতের খরচ যত বাড়ে, ইউনিট প্রতি তার দামও বাড়ে।

নেপালবাবু বলেন, ‘‘কোনও গ্রাহক মাসে ১০০ ইউনিট করে বিদ্যুৎ খরচ করলে, তিন মাসে মোট খরচ হয় ৩০০ ইউনিট। প্রতি মাসের জন্য তাঁর কাছ থেকে ইউনিট পিছু ৫.২৬ টাকা হিসেবে বিদ্যুতের দাম নেওয়া উচিত। অথচ, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা তিন মাসে ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচের জন্য তাঁর কাছে ৬.৭৩ টাকা হিসেবে (৩০০ ইউনিট খরচ হলে ৬.৭৩ টাকা) বিল পাঠাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের কাছে মাস বাবদ যেখানে ৫২৬ টাকা নেওয়ার কথা সেখানে ৬৭৩ টাকা চাওয়া হচ্ছে! এটা কী করে হয়!’’ তাঁর কথায়, কলকাতায় বিদ্যুৎ সংস্থা ‘সিইএসসি’ প্রতি মাসের বিল মাসেই নেয়। রাজ্যের জেলাগুলির ক্ষেত্রে কেন তা হলে অন্য নিয়ম থাকবে?

Advertisement

বিধানসভার আগামী অধিবেশনে এ নিয়ে সরব হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘আগামী ২৫ নভেম্বর পুরুলিয়া জেলার সমস্ত ব্লকে বিদ্যুৎ দফতরের সামনে এ নিয়ে আমাদের দল বিক্ষোভ দেখাবে। যে পরিমাণ টাকা বেশি আদায় করা হয়েছে, তা ফেরতের দাবি তোলা হবে।’’ বিদ্যুৎ সরবরাহের নানা বিষয় নিয়ে বছরভর আন্দোলন করে ‘অ্যাবেকা’। সংগঠনের জেলা সম্পাদক গৌতম হাটিও নেপালবাবুর সঙ্গে সহমত। তাঁর দাবি, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়ে আমরা সরব। অনেক আন্দোলন করেছি।’’

রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পুরুলিয়ার রিজিওনাল ম্যানেজার শৌভিক বেরা বলেন, ‘‘বিলের নীতি ঠিক করেন কর্তৃপক্ষ। আর কী ভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল নেওয়া হবে তা ঠিক করে ইলেকট্রিক রেগুলেটরি কমিশন। তাই এ নিয়ে জেলা থেকে কিছু বলার নেই।’’

তবে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার একটি সূত্র দাবি করছে, অনেকে মনে করেন, এক মাসে বিদ্যুতের বিল এলে এই ধাপ অনুযায়ী, গ্রাহকের খরচ কমত। কিন্তু সে ক্ষেত্রে যে ধাপগুলিও কমে আসত তা চিন্তা করা হয় না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তিন মাসের বিলের ক্ষেত্রে দাম বাড়ার প্রথম ধাপটি ১০২ ইউনিট হলে, এক মাসের বিলের ক্ষেত্রে তা কমে ৫০ ইউনিট হতে পারে। ফলে, এক মাসের বিল হলেই গ্রাহকের খরচ কমবে, এমনটা মনে করা ঠিক নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement