লন্ডভন্ড: শহরের একটি মদের দোকানের বাইরে। নিজস্ব চিত্র
এলাকায় মদের দোকান করা যাবে না, এই অজুহাতে দোকান খোলার দিনেই একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকানে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল মহিলাদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে পুরুলিয়া শহরের ভাটবাঁধ মোড় এলাকার ঘটনা।
জেলা আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়কের ধারে মদের দোকান রাখা যাবে না, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের জেরে এই দোকানটি ভাটবাঁধ মোড়ে স্থানান্তরিত হয়। দোকানের মালিক প্রায় সপ্তাহ দুয়েক আগে একদিন দোকান খোলেন। সে দিনই তাংকে দোকান খোলা যাবে না বলে স্থানীয় কয়েকজন আপত্তি জানিয়েছিলেন। তার জেরে তিনি কিছুদিন দোকান বন্ধ রাখেন। শুক্রবারই সকালে দোকান খুলতেই দুপুরে হামলা হয়।
অভিযোগ, বেশ কয়েকজনের মহিলা লাঠি নিয়ে দোকানে ঢুকে আলমারি থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতল রাস্তায় আছড়ে ভাঙতে থাকেন। গোটা রাস্তায় মদ ছড়িয়ে যায়। এই চৌরাস্তার মোড়টি রাঁচি রোড-জামশেদপুর রোডের বাইপাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রমীলা বাহিনীর তাণ্ডবে ওই রাস্তায় যানবাহন আটকে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, ‘‘মহিলার মদ ফেলার সময় বলছিলেন, এমনিতেই এই এলাকায় এতদিন মাতালদের উপদ্রবে টেকা দায়। তার উপরে এখানে দোকান হলে রাস্তাঘাটে চলাফেরা আর করা যাবে না। সংসারে অশান্তি বাড়বে। তাই এই এলাকায় মদের দোকান তাঁরা খুলতে দেবেন না।’’
দামি দামি ব্র্যান্ডের বোতল রাস্তায় আছড়ে ভাঙতে দেখে অনেকেই অবাক হয়ে যান। হাঁটা থামিয়ে অনেকে তা দেখতে থাকেন। কেউ কেউ মোবাইলের ক্যামেরায় ছবি তুলতে শুরু করেন। অনেকেই আফশোস করতে থাকেন— ‘‘ইস্, এমন দামি দামি মদের বোতল ভেঙে দিচ্ছে রে! আহা রাস্তায় মদ পড়ে নষ্ট হচ্ছে!’’ তাতে অবশ্য ভ্রূক্ষেপ ছিল না মহিলাদের। কিছুক্ষণ ভাঙচুর চালিয়ে এখানে দোকান করা যাবে না, বলে হুমকি দিয়ে তাঁরা সরে প়ড়েন। তারপরে পুলিশ আসে। পুলিশই রাস্তা থেকে কাঁচ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
ক্ষতির চোটে দিশেহারা দোকানের মালিক আসলাম শের বলেন, ‘‘দোকানে আমি ছিলাম না, ম্যানেজার ছিল। আচমকা বেশ কিছু মহিলা লাঠি হাতে দোকানে ঢুকেই ভাঙচুর শুরু করে। কত ক্ষতি হয়েছে, আর হিসেব করিনি।’’ তিনি জানান, পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করব।
মাসখানেক আগেও পুরুলিয়া শহরে বেশ কয়েকটি মদের দোকান বারেও একই ভাবে মদ বিক্রি বন্ধের দাবিতে ভাঙচুর চালিয়েছিলেন মহিলারা। ফের কি সেই দিন ফিরে এল? প্রশ্ন মদ ব্যবসায়ীদের। তাঁদের প্রশ্ন, সরকারের কাছে লাইসেন্স নিয়ে দোকান খোলা হয়েছে। তারপরেও ভাঙচুর চললে, প্রশাসন ও পুলিশকেই তা রুখতে হবে। সেই তৎপরতা এ দিন কোথায় ছিল?
আবগারি দফতরের জেলা আধিকারিক সিদ্ধার্থ সেন বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। আগে রিপোর্ট পাই, তারপর দেখা যাক কী করা যায়।’’