প্রতীকী ছবি।
মানুষের থেকে নানা অছিলায় যাঁরা টাকা তুলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার সেই পথে হেঁটে ওন্দার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কিছু সদস্যা এক তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে থানায় স্মারকলিপি জমা দিলেন।
শনিবার ওন্দা থানায় ওই স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। ওন্দার চন্দ্রকোণা এলাকার ৩২ জন মহিলা স্বাক্ষর করেছেন স্মারকলিপিতে। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই তৃণমূল নেত্রী বাণী হাজরাও চন্দ্রকোণার বাসিন্দা। তিনি ওন্দা পঞ্চায়েত সমিতির নারী ও শিশু কল্যাণ স্থায়ী সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ। বর্তমানে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্যা ও ওন্দা ব্লক যুব তৃণমূলের সভানেত্রী। বিশেষ পুলিশি নিরাপত্তাও বরাদ্দ রয়েছে বাণীদেবীর জন্য।
এমন এক নেত্রীর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় স্বভাবতই অস্বস্তি দানা বেধেছে দলের অন্দরে। ওন্দার বিধায়ক অরূপ খাঁ বলেন, “বাণীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হবে।” বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এলাকাবাসী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষ। তাই এখনই এ নিয়ে কিছু বলব না।”
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ওই মহিলাদের অভিযোগ, তাঁদের পাওয়া সরকারি অনুদানের থেকে বখরা নিতেন বাণীদেবী। এক একজনের কাছ থেকে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার পর্যন্ত টাকা নিতেন বলে অভিযোগ। টাকা দিতে অস্বীকার করলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেল খাটানো বা এলাকাছাড়া করার হুমকিও দিয়েছেন বলে স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে। এ দিন অভিযোগকারীরা বিভিন্ন সময়ে দেওয়া টাকা ফেরত পাওয়ার দাবি তুলেছেন। পাশাপাশি, অভিযুক্তের শাস্তির দাবিও তুলেছেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, একটি স্মারকলিপি ওন্দা থানায় জমা পড়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাণীদেবী অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “এ সব বিজেপির চক্রান্ত ছাড়া আর কিছু নয়। আমি কাটমানি নিয়েছি বলে যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারেন, তা হলে নিশ্চয় টাকা ফেরত দেব।” তাঁর দাবি, এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে বলেই মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অমরনাথ শাখা বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। তবে ওই নেত্রীর জীবনযাত্রার মান গত কয়েক বছরে আমূল বদলে গিয়েছে। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলেই প্রশ্ন উঠেছে। এ বার সত্যিটা প্রকাশ্যে আসছে।”
বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, “তৃণমূলনেত্রী ‘মানিব্যাক পলিসি’ চালু করেছেন। তোলাবাজির শিকার হওয়া সাধারণ মানুষের টাকা ফিরিয়ে দিতেই হবে।”