চিত্রিত: বিষ্ণুপুর শহর লাগোয়া শিয়ালকন্দাই গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
আদিবাসী গ্রামের দেওয়ালে দেওয়ালে ছবি আঁকছেন কয়েকজন কলেজ পড়ুয়া। অনেকটা যামিনী রায়ের ঘরানায় রঙ-তুলির টানে ফুটে উঠছে বিভিন্ন অবয়ব। ছবির সবার মুখে ‘মাস্ক’।
সোমবার বিষ্ণুপুর শহর লাগোয়া শিয়ালকন্দাই গ্রামে গিয়ে দেখা হল শৌভিক কালি, শুভঙ্কর রজক, দীপাঞ্জনা রায় ও দেবারতি সিংহের সঙ্গে। তাঁরা সবাই কলেজ পড়ুয়া। শহরের বিভিন্ন পাড়ায় থাকেন। জানান, কিছু দিন আগে হাঁটতে হাঁটতে শহর পেরিয়ে এই গ্রামের কাছে চলে এসেছিলেন। দেখেছিলেন, গ্রামের মানুষজন এখনও করোনা নিয়ে বিশেষ ওয়াকিবহাল নন। প্রায় কেউই ‘মাস্ক’ ব্যবহার করছেন না। তার পরেই ঠিক করেন, ছবি এঁকে সবাইকে সচেতন করবেন।
শিয়ালকন্দাই ছোট গ্রাম। আটটি পরিবারের বাস। বৃদ্ধা মালতি হাঁসদা, যুবক কৃষ্ণ হাঁসদা, লক্ষ্মীকান্ত সোরেন বলেন, ‘‘মাঘ মাসে শালুই পুজোর সময়ে দেওয়ালে রঙ করি। গত দু’বছর করা হয়ে ওঠেনি।’’ কলেজ পড়ুয়ারা দেওয়ালে ছবি আঁকার প্রস্তাব দিতেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এখন যেতে-আসতে চোখে পড়ছে ‘মাস্ক’ পরানো ছবি।
লক্ষ্মীকান্ত বলেন, ‘‘মাস্ক পরে সুস্থ থাকার ব্যাপারটা ছবিতে খুব সুন্দর করে বোঝানো হয়েছে। গ্রামের সবাইকে বোঝাতে আমাদের সুবিধা হচ্ছে।’’ কৃষ্ণ বলেন, ‘‘প্রত্যেক দিন কাজের তাগিদে আমাদের বেরোতে হচ্ছে। বেরনোর সময় ছবি দেখেই মাস্ক নেওয়ার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। আর ভুল হওয়ার জো নেই।’’
শৌভিক ও দেবারতি জানান, সবাই মিলে হাত খরচের টাকা থেকে চাঁদা দিয়ে নানা সরঞ্জাম কিনেছেন। তা দিয়েই চলছে ছবি আঁকা। তাঁরা বলেন, ‘‘এই কঠিন সময়ে সবাই সুস্থ থাকুন, সেটাই আমরা চাই।’’
বিষ্ণুপুর মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রামশঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে নানা রকমের সচেতনতার প্রচার চলছে। পাশাপাশি, শহরের কিছু কলেজ পড়ুয়া যে ভাবে এগিয়ে এসেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’’