মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
আবারও বীরভূম জেলা সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তিনি বোলপুরে আসবেন। সে দিন দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক করার কথা মমতার। রবিবার সিউড়িতে প্রশাসনিক সভা রয়েছে তাঁর। শনিবারের সাংগঠনিক বৈঠকে কোর কমিটিতে রদবদল করতে পারেন নেত্রী, এমন সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে জেলার তৃণমূল মহলে। রদবদল আদৌ যদি হয় তবে কি বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে, প্রশ্ন এখন সেটাই।
বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল তিহাড় জেলে বন্দি। তাঁর অনুপস্থিতিতে বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠন চালাতে ন’সদস্যের একটি কোর কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন সর্বোচ্চ নেত্রী। গত ২৩ জানুয়ারি কলকাতায় দলনেত্রীর কালীঘাটের বাসভবনে বীরভূমের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মমতা। সেখানে ন’জনের কোর কমিটি ছাঁটাই করে পাঁচ সদস্যের করে দিয়েছিলেন। তাতে রয়েছেন চন্দ্রনাথ সিংহ, অভিজিৎ সিংহ রায়, বিকাশ রায়চৌধুরী, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুদীপ্ত ঘোষ। বাদ পড়েছিলেন কাজল শেখ, শতাব্দী রায়েরা। লোকসভার দিকে তাকিয়ে শতাব্দীর বাদ যাওয়া ছিল স্বাভাবিক। কারণ, সাংসদদের এখন স্রেফ নিজের কেন্দ্রে মনঃসংযোগ করতে বলা হয়েছে। তবে, কাজল বাদ পড়ায় অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। শুধু বাদ পড়াই নয়, দলনেত্রীর কাছে তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য রীতিমতো ধমক খেতে হয়েছিল সভাধিপতিকে। তার পর কেটে গিয়েছে প্রায় এক মাস। এ বার দু’দিনের সফরে দলনেত্রী নিজেই আসছেন বীরভূম জেলায়। সেখানে সাংগঠনিক বৈঠকও করবেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, বীরভূমে তৃণমূলের কোর কমিটিতে সদস্য সংযোজন করতে পারেন দলনেত্রী। সেই বৈঠকেই কি কাজল আবার কোর কমিটিতে ফিরে আসবেন? না কি কাজলকে বাদ রেখেই বীরভূমে লোকসভার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে চলেছেন দলনেত্রী?
তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবার সড়কপথে পশ্চিম বর্ধমান থেকে বোলপুরে আসবেন মমতা। বল্লভপুরের ‘রাঙাবিতান’ অতিথি নিবাসে ওঠার কথা তাঁর। সেখানেই জেলার বিধায়ক, সাংসদ এবং কোর কমিটির সদস্যদের নিয়ে বসবেন মমতা। স্থির করে দেবেন লোকসভার রণকৌশল। সেই বৈঠককেই এখন পাখির চোখ করেছেন কাজল অনুগামীরা। তাঁদের ধারণা, শনিবারের বৈঠকেই মমতা কোর কমিটিতে ফেরাবেন কাজলকে। এ ছাড়া, রবিবার সিউড়ির চাঁদমারির মাঠে প্রশাসনিক সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সেখান থেকে প্রায় ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি জলপ্রকল্পের শিলান্যাস করার কথা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছ’একর জমি জুড়ে বসবে ‘রিফাইন ওয়াটার মেশিন’৷ এ ছাড়া, সংস্কারের পর সতীপীঠের অন্যতম ফুল্লরাতলা ও নন্দকেশরীতলার নবরূপের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, জেলা জুড়ে পথশ্রী প্রকল্পের অন্তর্গত একাধিক রাস্তা, শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের আওতায় রাস্তা, জেলা পরিষদের রাস্তা এবং পূর্ত বিভাগের রাস্তার উদ্বোধন করবেন মমতা। একই সঙ্গে দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি প্রকল্পের জন্য জমিদাতা ৫০০ জনের হাতে গ্রুপ ডি ও জুনিয়র পুলিশ কনস্টেবল পদের চাকরির নিয়োগপত্রও তুলে দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।
রবিবারই হেলিকপ্টারে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। সে কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর স্বল্প দৈর্ঘ্যের সফরসূচি তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী সফরের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়াও শুরু করে দিয়েছে প্রশাসন।