পুরুলিয়া স্টেশনে।—নিজস্ব চিত্র
চোখ খুলে দিয়েছে একটি ধর্ষণের ঘটনা। অবশেষে মেরামত করা হচ্ছে পুরুলিয়া স্টেশনের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাগুলি। রেলের পক্ষ থেকে প্ল্যাটফর্মের সিসিটিভিগুলি সচল করার কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। এক বছরের কিছু বেশি সময় আগে স্টেশন চত্বরের বিভিন্ন অংশে ২৬টি ক্যামেরা লাগানো হয়। এই ক্যামেরাগুলি ঠিকঠাক কাজও করছিল। বিভিন্ন সময়ে ঘটনার তদন্তে এই ক্যামেরার ফুটেজ থেকে তদন্তে পুলিশ বেশ কিছু সূত্রও পেয়েছে।
চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এক বিকেলে রাঁচির এক তরুণী বাড়ি ফেরার জন্য পুরুলিয়া স্টেশনে ট্রেন ধরার অপেক্ষায় ছিলেন। স্টেশনেই খাবারের দোকান চালানো এক যুবক তাঁকে প্ল্যাটফর্মের বাইরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে ওই তরুণী সেই রাত্রেই রেলপুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। শুধু তাই নয়, তিনি গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন। এই ঘটনার পরেই স্টেশনের সিসিটিভি-র কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর পাশাপাশি একাধিক সংগঠন স্টেশনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রেল কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দেন। প্রশ্ন ওঠে, প্ল্যাটফর্মে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও কেন এই ছবি ধরা পড়ল না যে, রাঁচির ওই তরুণী এক যুবকের সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের বাইরে যাচ্ছেন। তদন্তে জানা যায়, যে ঘটনার সময় প্ল্যাটফর্মের সিসিটিভিগুলি অকেজো ছিল। বেশ কিছুদিন ধরেই অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে সিসিটিভিগুলি। এই ঘটনার পরে রেল পুলিশ জানিয়েছিল, দ্রুত সিসিটিভিগুলি ফের সচল করার জন্য রেলকে অনুরোধ জানানো হবে।
রেল সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ) সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যামেরাগুলি মেরামতের কাজ শেষের পথে। এখন মোট ২৬টি ক্যামেরা রয়েছে পুরুলিয়া স্টেশনের তিনটি প্ল্যাটফর্ম, ফুট ওভারব্রিজ ও স্টেশনের বাইরে। ক্যামেরার সংখ্যাও বাড়ানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। এ ছাড়া, আরপিএফের কার্যালয়ে পৃথক একটি মনিটর রুমও চালু করা হচ্ছে, যেখান থেকে সমস্ত ক্যামেরার মাধ্যমে স্টেশনের বিভিন্ন অঞ্চলে নজরদারি চালানো যায়। জানা গিয়েছে, এত দিন যে সংস্থা এই ক্যামেরাগুলি দেখভাল করার দায়িত্বে ছিল, তাদের সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পরে রেলের পক্ষ থেকে নতুন করে কোনও সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হয়নি। তাই বিকল হয়ে পড়েছিল ক্যামেরাগুলি। এখন নতুন একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ক্যামেরাগুলি দেখভাল করার।