তালাবন্ধ: এই সেই অজ্ঞানওয়াড়ি। নিজস্ব চিত্র
বহু জায়গায় ঘরের অভাবে ক্লাব কিংবা গাছতলাতেই বছরের পর বছর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলছে। ঠিক উল্টো ছবি ময়ূরেশ্বরের কাশীপুরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। বছর দু’য়েক আগে বাড়ি তৈরি হয়েছে। তবুও গাছতলাতেই চলছে কেন্দ্র। অভিযোগ, কর্মীর মর্জিতেই ঘর থাকা সত্ত্বেও কচিকাঁচাদের গাছতলাতে পঠনপাঠন করতে হচ্ছে বলে।
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৫ সালে প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে শৌচাগার-সহ কাশীপুর গ্রামে ২ কক্ষের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বাড়ি তৈরি হয়। কিন্তু সেটি আজও তালা বন্ধ হয়েই পড়ে রয়েছে। পঠনপাঠন চলছে প্রায় ২ কিমি দূরে গিধিলা গ্রামে একটি গাছতলায়। এরফলে চরম সমস্যায় পড়েছে কচিকাঁচারা। এমনিতেই রাস্তার অবস্থা বেহাল, তার উপরে মাত্রাতিরিক্ত গরমে তাদের ২ কিমি দূরের ওই কেন্দ্রে পৌঁছতে দুর্ভোগের শেষ নেই। পুজা দাস, কৃষ্ণা দাসরা বলে, ‘‘যাওয়ার সময় যদি বা কোনও রকমে পৌঁছনো গেল, ফেরার সময় মনে হয় বাড়ি বুঝি আর ফিরতে পারব না। হেঁটে পায়ে তো ব্যথা হয়ই, গরমেও মনে হয় জিভ বেরিয়ে আসছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা তথা অভিভাবক প্রহ্লাদ দাস, উদয় দাসরা জানান, ঘর না থাকলেও তবু মানা যায়। কিন্তু দু’বছর ধরে ঘর হয়ে পড়ে থাকা স্বত্ত্বেও ছেলেমেয়েগুলোর ২ কিমি হেঁটে গিয়ে গাছতলায় পড়তে যাওয়াটা কিছুতেই মানতে পারছি না। কর্মী এমন কী প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করেও কোনও লাভ হয়নি।
ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গড়তে কাঠা দু’য়েক জায়গা দান করেছিলেন উৎপল দাস, শিশির দাস, ভরত দাসরা। তাঁরা জানান, ছেলেমেয়েদের কষ্টের কথা ভেবে জায়গা দিয়েছিলাম। কিন্তু ছেলেমেয়েদের কষ্ট তো ঘোচেইনি, উল্টে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের হাল দেখে এখন আমাদেরই কষ্ট হচ্ছে। রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে গোচারণভূমিতে পরিণত হতে বসেছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চত্বর। কর্মী লোহারানি মাড্ডি অবশ্য জানিয়েছেন, ওই কেন্দ্রের ব্যাপারে প্রশাসন বা গ্রামবাসী কোনও তরফেই তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। তাই আমি কিছু বলতে পারব না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ব্লক সুসংসহত শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক শান্তি বাগদি বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। আজই খোঁজ নিয়ে দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’