খোশমেজাজে: বল্লভপুরডাঙায় আদিবাসী কারুশিল্প কেন্দ্রের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
শেষবার বোলপুরে এসে যে আদিবাসী গ্রাম ঘুরে দেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তিনিকেতনের সেই বল্লভপুরডাঙা গ্রামকে ইতিমধ্যে ‘মডেল গ্রামের’ রূপ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের কথা ভেবে এ বার সেই গ্রামেই আদিবাসীদের কারুশিল্পের প্রদর্শনী ও বিপণন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। সোমবার বোলপুরে নেমেই সেই বিপণন কেন্দ্রের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোলপুর শান্তিনিকেনে পর্যটক-প্রিয় বেশ গন্তব্য রয়েছে। প্রশাসনের আশা, সেই তালিকায় যুক্ত হবে বল্লভপুরডাঙার এই আদিবাসী কারুশিল্পের প্রদর্শনী ও বিবরণ কেন্দ্রটিও।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন কেমন আছেন, তাঁরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা ঠিক মতো পাচ্ছেন কিনা তা খতিয়ে দেখতে শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরির জঙ্গলে ভিতরের গ্রাম বল্লভাপুরডাঙায় গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এলাকার বাসিন্দারা আবাস যোজনার বাড়ি, শৌচাগার, রাস্তা, বিধবা ভাতা, বিদ্যুৎ পরিষেবা না-পাওয়া সহ একাধিক সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রী কাছে তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত সমস্যাগুলি সমাধানের নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসনকে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো সেই আদিবাসী গ্রামকে বর্তমানে মডেল গ্রামেরও রূপ দেওয়া হয়েছে।
পর্যটকদের কথা ভেবে এ বার ওই গ্রামে আদিবাসী উন্নয়ন দফতর ও পঞ্চায়েত সমিতি আনুমানিক ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মোট তিনটি কক্ষ মিলিয়ে আদিবাসী কারু শিল্পের প্রদর্শনী ও বিপণন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। আদিবাসীদের তির-ধনুক থেকে শুরু করে ধামসা-মাদল, তাঁদের হাতে বোনা বিভিন্ন বাঁশ ও বেতের কারুকার্য করা জিনিসপত্র ওই কেন্দ্রের প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। এ ছাড়াও আদিবাসীদের হাতে তৈরি বিভিন্ন বাঁশ, মাটি, কাপড়ের উপর সুতোর কারুকার্য করা জিনিসের সম্ভার নিয়ে একটি বিপণন কেন্দ্রও তৈরি করা হয়েছে। পর্যটকেরা বেড়াতে এসে কারুশিল্পের প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পাশাপাশি যাতে আদিসাবীদের হাতে তৈরি জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যেই এই উদ্যোগ বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। এতে এক দিকে যেমন পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে, তেমনই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের রোজগারের বন্দোবস্ত করা যাবে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
বিডিও (বোলপুর শ্রীনিকেতন) শেখর সাঁই বলেন, “আদিবাসী সংস্কৃতির প্রচার, প্রসারের পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য, পর্যটনের মাধ্যমে এলাকার মানুষের রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা করা। তাই জেলা প্রশাসনের তরফে এমন উদ্যোগ।’’