প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা। ছবি: ফেসবুক।
ইটভাটা থেকে পাওয়া রাজস্বের নাকি হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি কর্মচারীদের ‘পকেটে’ চলে যাচ্ছে একাংশ। সোমবার পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে এমনই অভিযোগ উঠতে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি পুরুলিয়ার জেলাশাসকের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বললেন, ওই জেলাশাসকের প্রতি তাঁর ধারণাই বদলে গেল।
শুক্রবার পুরুলিয়া জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তৃণমূলের এক নেতা অনুযোগ করেন, স্থানীয় ইটভাটা থেকে যে সরকারি অর্থ আদায় হয়, তার হিসেব পাওয়া যায় না। সেগুলো নাকি কয়েক জন পকেটে পোরেন। অভিযোগ উঠতেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন করেন জেলা শাসককে। উদ্বেগের গলায় মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ডিএম শুনতে পাচ্ছো? এগুলো কিন্তু তৃণমূল করেনি। করছে প্রশাসনের নীচের তলার কর্মীরা।’’ এর পরই তাঁর সংযোজন, ‘‘নিজেরা টাকাটা নেয়, নিজেরাই খেয়ে নেয়! কী জেলা চালাচ্ছ তুমি (জেলাশাসক)? এত দিন জেলায় আছো। আমার ধারণাই বদলে গেল।’’ এখানেই না থেমে মমতা আরও বলেন, ‘‘এত কিছু দিচ্ছি মানুষকে, তবু কয়েক জন এত লোভী কেন হয়ে গিয়েছে। আর কত চাই? আমার পার্টির লোক হলে আমি টেনে চারটে থাপ্পড় মারতাম। তাদের আমি সব সময় শাসন করি।’’
জেলাশাসককে মমতা এ-ও বলেন, ‘‘আমি কথা বলছি (প্রশাসনিক বৈঠকে), তোমার পুলিশ চলে যাবে, তদন্ত করবে। একে বলে প্রশাসন, একে বলে কাজ। গরিব মানুষ যখন একটা কমপ্লেন করে, আমি নিতে পারি না। সে যে-ই হোক।’’
প্রশাসনের একাংশের কাজে কার্যত হতাশা ফুটে ওঠে মমতার গলায়। তিনি বকুনি দিয়ে বলেন, ‘‘ওই ওপরে ওপরে ঘুরে বেড়িয়ে ছবি তুলে কোনও কাজ হয় না।’’ পাট্টা বিলির জন্য কেন চিহ্নিতকরণ হয়নি, এই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন ছোড়েন। বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকারে যাঁরা যাচ্ছেন, কাজ করে দেবেন। এ বার আর অনুরোধ নয়, সোজাসুজি নির্দেশ দিচ্ছি।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।