তিন দিন ধরে একটু একটু করে গরম হচ্ছিল বাড়ির মেঝে। নিজস্ব চিত্র।
তিন দিন ধরে একটু একটু করে গরম হচ্ছিল বাড়ির মেঝে। প্রথমে অতটা গা করেননি কেউই। কিন্তু শনিবার দেখা গেল, হাঁটাচলার সময় পায়ে রীতিমতো ছেঁকা লাগছে! ভয়ে বাইরে বেরিয়ে এলেন বাড়ির লোকেরা। বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের ঘটনা। কুম্ভকার পরিবারে এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভুঁইয়াপাড়া গ্রামে।
বছর দু’য়েক আগে থেকে ওই পাকা একতলা বাড়িতে থাকা শুরু করেছিল কাশিনাথ কুম্ভকারের পরিবার। এত দিন সব ঠিকঠাক ছিল। পরিবার জানিয়েছে, দিন তিনেক আগে হঠাৎ করে সিঁড়ির নীচে থাকা মেঝের অংশ গরম হতে শুরু করে। প্রথমে বিষয়টিকে বাড়ির কেউ গুরুত্ব দেননি। কিন্তু শনিবার সকালে দেখা যায়, মেঝের ওই অংশ দিয়ে আর হাঁটাচলা করা যাচ্ছে না। ছেঁকা লাগছে! গৃহকর্তা কাশিনাথ বলেন, ‘‘বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম। কিছুই তো বুঝতে পারছি না। আমরা গ্রাম পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি বিষয়টা।’’
এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনেরও দ্বারস্থ হয়েছে পরিবার। বাড়ির আর এক সদস্য কিরিটি কুম্ভকার বলেন, ‘‘এ রকম ঘটনা আগে কখনও দেখিনি। শুনিওনি। পুলিশকে জানিয়েছি। ভূতত্ত্ব গবেষকরা এসে তদন্তে কারণ খুঁজে বার করুক।’’ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মানিক কর। তিনি বলেন, ‘‘আমিও ব্যাপারটা বুঝতে পারছি না। আমরা এটাকে একেবারেই হালকা ভাবে নিচ্ছি না। গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। কী করা যায় দেখছি।’’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক জয়দেব চন্দ্র বলেন, “আমরা খবর পেয়েছি। অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার কোনও নেই। আমরা ঘটনাস্থলে যাব। ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে দেখার পরেই আসল কারণ বোঝা যাবে। আমাদের প্রাথমিক অনুমান মেঝের নীচের অংশে সিমেন্টের সঙ্গে কোনও রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণে তাপ উৎপন্ন হয়ে থাকতে পারে।” বাঁকুড়া খ্রিষ্টান কলেজের ভূগোলের অধ্যাপক সুব্রত পান বলেন, “পরীক্ষানিরিক্ষা না করে এর পিছনে কী কারণ, রয়েছে তা বলা সম্ভব নয়। বিষয়টিকে পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত। একই সঙ্গে ওই নির্দিষ্ট জায়গায় তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।”